বাংলাদেশের ইতিহাস: মুঘল আমল -২ Flashcards
কোন সুবাদারের সময় থেকে বাংলায় নবাবী শাসন শুরু হয়?
মুর্শিদকুলী খান।
বাংলায় নবাবী শাসনের সূত্রপাত করেন মুঘল সুবাদার মুর্শিদকুলী খান।
তিনি ১৭০০ সালে বাংলার দীউয়ান এবং ১৭১৬ সালে নাজিম (সুবাদার) নিযুক্ত হন।
মুঘল সাম্রাজ্যের শেষ দিকে তিনি স্বাধীনভাবে বাংলা শাসন করতে শুরু করেন। এর মাধ্যমে বাংলায় নবাবী শাসনামলের সূচনা হয়।
একে একে বাংলা ও উড়িষ্যার নাজিম বা গভর্নর, বিহারের দীউয়ান এবং কয়েকটি জেলার ফৌজদারের পদ অলঙ্কৃত করার পর আঠারো শতকের প্রথম দিকে।
বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব ছিলেন সিরাজউদ্দৌলা।
বাংলাদেশে বারো ভুঁইয়ার আবির্ভাব ঘটে-
0
আকবরের সময়
বারো ভূঁইয়া:
বাংলার বড় জমিদাররা মোগলদের অধীনতা মেনে নেননি।
মোগলদের বিরুদ্ধে একজোট হয়ে অবস্থান নেন।
এরাই বার ভুঁইয়া।
নেতা ছিলেন ঈশা খাঁ।
রাজধানী ছিল সোনারগাঁ।
মৃত্যুর পরে মুসা খাঁ নেতা নির্বাচিত হন।
বারো ভুঁইয়া বলা হত কোন আমলের জমিদারদের?
মুঘল আমলের
বারো ভূঁইয়া:
বাংলার বড় জমিদাররা মোগলদের অধীনতা মেনে নেননি।
মোগলদের বিরুদ্ধে একজোট হয়ে অবস্থান নেন।
এরাই বার ভুঁইয়া।
নেতা ছিলেন ঈশা খাঁ।
রাজধানী ছিল সোনারগাঁ।
মৃত্যুর পরে মুসা খাঁ নেতা নির্বাচিত হন।
কয়েকজন প্রসিদ্ধ বারোভূঁইয়া:
চাঁদগাজী,
জুনা গাজী,
চাঁদ রায়,
কেদার রায়,
প্রতাপ আদিত্য,
কংস নারায়ন।
সম্রাট শাহজাহানের কোন পুত্র বাংলার শাসনকর্তা ছিলেন?
শাহ সুজা।
সুবাদার শাহ সুজা: শাহজাহানের ২য় ছেলে।
তিনি বড় কাটরা, হোসেনী দালান, ঈদগাহ, চুড়িহাট্টা মসজিদ নির্মাণ করেন। পর্তুগীজদের ব্যবসায়ের নিশান দেন।
তিনি রাজমহল থেকে ঢাকায় রাজধানী স্থানান্তর করেন।
মীর জুমলার কামানটি কোন যুদ্ধে ব্যবহৃত হয়?
আসাম যুদ্ধে।
মীর জুমলা:
তিনি মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব কর্তৃক নিয়োপ্রাপ্ত হন ।
তিনি পাগলা সেতু, ঢাকা গেইট নির্মাণ করেন।
কোনটি মুঘল আমলের স্থাপত্য কীর্তি?
লালবাগ শাহী মসজিদ।
লালবাগ শাহী মসজিদটি নির্মান করেন যুবরাজ মোহাম্মদ আযম।
লালবাগ শাহী মসজিদটি ঢাকার লালবাগ কেল্লার সন্নিহিত স্থানে অবস্থিত।
আওরঙ্গজেবের রাজত্বকালে যুবরাজ মোহাম্মদ আযম মাত্র এক বছরের সামান্য কিছু বেশি সময়ের জন্য (১৬৭৮-১৬৭৯) বাংলার সুবাহদার ছিলেন।
সেই সময় তিনি একটি দূর্গ নির্মাণ শুরু করেছিলেন যেটির অংশ হিসেবে এই মসজিদটি নির্মিত হয়।
লালবাগ শাহী মসজিদটি নির্মান করেন-যুবরাজ মোহাম্মদ আযম।
সুবা বাংলা’ শব্দটি প্রথম ব্যবহার করা হয় কার আমলে?
সম্রাট আকবরের।
সুবা বাংলা:
মোগল প্রদেশগুলো সুবা নামে পরিচিত ছিল।
সুবার দায়িত্ব প্রাপ্তদের বলা হত সুবাদার।
ইসলাম খান ১৬১০ সালে সর্বপ্রথম ঢাকাকে রাজধানী করেন এবং নাম রাখেন ‘জাহাঙ্গীরনগর’।
সুবাদার শাহ সুজা বড় কাটরা নির্মাণ করেন।
ঢাকা গেট নির্মাণ করে সুবাদার মির জুমলা।
সুবাদার শায়েস্তা খান চট্টগ্রামের নাম দেন ইসলামাবাদ।
সুবাদার শায়েস্তা খান নির্মাণ করেন ছোট কাটরা, লালবাগ কেল্লা, চক মসজিদ, সাতগম্বুজ মসজিদ।
কত সালে সম্রাট আকবর বাংলার শাসনভার গ্রহণ করেন?
১৫৭৬ ।
মুঘল সাম্রাজ্যের তৃতীয় নবাব হলেন সম্রাট আকবর।
বাংলায় মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা।
দ্বীন-ই-ইলাহী ধর্ম প্রচলন করেন।
জিজিয়া কর ও তীর্থকর রহিত করেন।
তাঁর সময়কালে সমগ্র বাংলা সুবই ই-বাঙলাহ নামে পরিচিতি ছিল।
বাংলা সন, বাংলা নববর্ষ, মনসবদারী প্রথা প্রচলন করেন।
ফতেহপুর সিক্রি নির্মাণ করেন।
টোডারমল আকবরের রাজস্বমন্ত্রী ছিলেন।
সভাকবি ছিলেন আবুল ফজল।
তিনি আইন-ই-আকবরি গ্রন্থ রচনা করেন।
তানসেন ছিলেন গায়ক।
তিনি বুলবুল-ই-হিন্দ নামে পরিচিত ছিলেন।
বীরবল বিখ্যাত কৌতুককার ছিলেন।
মুসলমান শাসনামলে এদেশে এসে অত্যাচার ও লুট করেছে কারা?
বর্গীরা।
নবাব আলীবর্দীর খার শাসনামলে বর্গীরা বাংলায় এসে অত্যাচার ও লুটতরাজ শুরু করে, যা প্রায় এক দশককাল স্থায়ী ছিল।
বর্গীর আক্রমণে মেদিনীপুর ও বর্ধমান এলাকা ধ্বংস হয় এবং ব্যবসা বাণিজ্য ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
একসময়ে বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার রাজধানী মুর্শিদাবাদের পূর্ব নাম ছিল-
মাকসুদাবাদ।
মুর্শিদাবাদ জেলার নামকরণ হয়েছে ‘মাকসুদাবাদ’ থেকে।
নবাব মুর্শিদ কুলি খাঁ এর আমলে বাংলার রাজধানী ছিল এই ‘মাকসুদাবাদ’।
বর্গি’ নামে পরিচিত ছিল কারা?
মারাঠা দস্যু।
দক্ষিণ ভারতের মারাঠারা বাংলায় ‘বর্গি’ নামে পরিচিত ছিলো।
মারাঠা সৈন্যবাহিনীর সর্বনিম্ন পদধারী সৈনিকরা ‘বর্গি’ নামে পরিচিত ছিলো। এই বরগি থেকেই বর্গি নামের উদ্ভব।
১৭৪০ খ্রিস্টাব্দে গিরিয়ার যুদ্ধে আলীবর্দী সরফরাজকে পরাজিত করে মুঘলদের অনুমোদন ছাড়াই বাংলার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন।
তার সময়ে বর্গি নামে পরিচিত মারাঠি দস্যুরা বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে আক্রমণ করে জনজীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছিল।
আলিবর্দি খান ১৭৪২ থেকে ১৭৫১ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ১০ বছর এদের প্রতিরোধ করে দেশছাড়া করতে সক্ষম হন।মারাঠা দস্যু।
ব্যাখ্যা:
দক্ষিণ ভারতের মারাঠারা বাংলায় ‘বর্গি’ নামে পরিচিত ছিলো।
মারাঠা সৈন্যবাহিনীর সর্বনিম্ন পদধারী সৈনিকরা ‘বর্গি’ নামে পরিচিত ছিলো। এই বরগি থেকেই বর্গি নামের উদ্ভব।
১৭৪০ খ্রিস্টাব্দে গিরিয়ার যুদ্ধে আলীবর্দী সরফরাজকে পরাজিত করে মুঘলদের অনুমোদন ছাড়াই বাংলার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন।
তার সময়ে বর্গি নামে পরিচিত মারাঠি দস্যুরা বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে আক্রমণ করে জনজীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছিল।
আলিবর্দি খান ১৭৪২ থেকে ১৭৫১ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ১০ বছর এদের প্রতিরোধ করে দেশছাড়া করতে সক্ষম হন।
আলীনগর চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় কার কার মধ্যে?
নওয়াব সিরাজউদ্দৌলা ও ইংলিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি।
আলীনগর চুক্তি ১৭৫৭ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি বাংলার নওয়াব সিরাজউদ্দৌলা ও ইংলিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়।
তিনি কলকাতার ইংরেজ বসতি অধিকার করেন (১৮-২০ জুন ১৭৫৬) এবং ইংরেজরা তাঁর প্রকৃত ক্ষতিসমূহের প্রতিবিধান করতে অস্বীকার করলে তিনি তাদের কলকাতা শহর থেকে বিতাড়িত করেন।
তিনি এ শহরের নতুন নামকরণ করেন আলীনগর।
বাংলার রাজস্ব ব্যবস্থা পুনর্গঠন করেন কে?
মুর্শিদকুলী খান।
মুর্শিদ কুলি খান:
মুর্শিদ কুলি খান ছিলেন বাংলার প্রথম নবাব। তিনিই মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের মৃত্যু পরবর্তী প্রথম স্বাধীন নবাব। তার উপর মুঘল সাম্রাজ্যের নামমাত্র আধিপত্য ছিল, সকল ব্যবহারিক উদ্দেশ্যেই তিনি বাংলার নবাব ছিলেন।
মুর্শিদ কুলি খাঁন, রাজা টোডরমল ও শাহ সুজার ভূমিরাজস্ব বন্দোবস্ত পদ্ধতির সংস্কার করেন এবং ‘মাল জমিনী’ নামক রাজস্ব ব্যবস্থা চালু করেন।
তিনি ঢাকাকে অনিরাপদ মনে করায় বাংলার রাজধানী মুর্শিদাবাদে স্থানান্তর করেন।
তিনি পুরান ঢাকায় বেগম বাজারে করতলব খাঁন মসজিদ নির্মাণ করেন।
সিরাজউদ্দৌলাকে হত্যাকারীর নাম কী?
মোহাম্মদী বেগ।
সিরাজউদ্দৌলা বাংলার শেষ স্বাধীন নওয়াব।
১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশীর যুদ্ধে সিরাজ পরাজিত ও নিহত হওয়ার পর ইংরেজরা বাংলার নওয়াবদেরকে তাদের হাতের পুতুলে পরিণত করে এবং নিজেরাই বাংলার প্রকৃত শাসকে পরিণত হয়।
পলাশীর যুদ্ধে মীরজাফরের বিশ্বাসঘাতকতায় নওয়াব বাহিনীর শোচনীয় পরাজয় হয় এবং নবাব নিজেও তাঁর তাবু ছেড়ে যেতে বাধ্য হন। কিন্তু শীঘ্রই তিনি বন্দি হন।
বন্দিদশায় সিরাজউদ্দৌলাকে মীরজাফরের পুত্র মিরনের নির্দেশে মোহাম্মদী বেগ নির্মমভাবে হত্যা করে।
পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধ হয়-
১৭৬১ সালে।
১৪ জানুয়ারি, ১৭৬১ সালে পানি পথের তৃতীয় যুদ্ধের সময় মুঘল সম্রাট ছিলেন দ্বিতীয় শাহ আলম। পানি পথের তৃতীয় যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ছিল আফগান সম্রাট আহমেদ শাহ দুররানী এবং মারাঠা সাম্রাজ্য। পরবর্তীতে ১৭৬৫ সালে সম্রাট শাহ আলম ইংরেজদের সাথে এলাহবাদ চুক্তি করেন।
পানিপথের যুদ্ধ ৩টি:
ভারতের হরিয়ানা প্রদেশের পানিপথ নামক স্থানে তিনটি বিখ্যাত যুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল। যে যুদ্ধগুলো ইতিহাসে ‘পানিপথ যুদ্ধ’ নামে পরিচিত এবং এই শহরটি ‘সিটি অফ উয়ীভারস’ এবং ‘টেক্সটাইল সিটি’ নামেও পরিচিত।
পানিপথের প্রথম যুদ্ধ (১৫২৬) হয়েছিল মুঘল সম্রাট বাবর ও দিল্লির সুলতান ইব্রাহিম লোদীর সঙ্গে। এযুদ্ধে সম্রাট বাবর জয়লাভ করেন। উল্লেখ্য থাকে যে, এই যুদ্ধে বাবর প্রথম ভারতে কামানের ব্যবহার করেন।
পানিপথের দ্বিতীয় যুদ্ধ (১৫৫৬) হয়েছিল মুঘল সম্রাট আকবরের সেনাপতি বৈরাম খাঁ-র সঙ্গে সম্রাট হেম চন্দ্র বিক্রমাধিত্যর (হিমু) সঙ্গে। এ যুদ্ধে সম্রাট আকবর জয়লাভ করেন।
পানিপথের তৃতীয়যুদ্ধ (১৭৬১) হয়েছিল দুররানি সাম্রাজ্য (আফগান সম্রাট আহমদ শাহ আবদালী) ও ভারতের মারাঠা সাম্রাজ্যের মধ্যে। এ যুদ্ধে দুররানি সাম্রাজ্যের জয় হয়।