বাংলাদেশের ইতিহাস: উপমহাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন-৩ Flashcards
বাংলায় ‘ঋণ সালিশি আইন’ কার আমলে প্রণীত হয়?
. এ কে ফজলুল
কোন নেতা জমিদারি প্রথা রদে প্রধান ভূমিকা পালন করেন?
এ. কে. ফজলুল হক
কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত বিপ্লবী গুপ্ত সমিতির নাম কী ছিল?
যুগান্তর
বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়েছিল নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন হিসেবে। তবে কংগ্রেসের কিছু উগ্র ও চরমপন্থী নেতার প্ররোচনায় আন্দোলনকারীদের একাংশ সন্ত্রাসী ও উগ্রপন্থী কার্যকলাপ শুরু করে।
ঢাকা ও কলকাতা শহরকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন গুপ্ত সমিতি গঠিত হয়। ব্যারিস্টার প্রথমনাথ মিত্র ঢাকায় ‘অনুশীলন সমিতি’ গঠন করেন। পুলিন বিহারী দাসকে এটি পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়।
এসময় কলকাতায় ‘যুগান্তর’ নামে একটি বিপ্লবী গুপ্ত সমিতি প্রতিষ্ঠা করা হয়। অরবিন্দ ঘোষ, বারিন্দ্র ঘোষ ও ভূপেন্দ্র নাথ দত্ত প্রমুখ ছিলেন এ সমিতির অন্যতম উল্লেখযোগ্য নেতা ।
বঙ্গভঙ্গকে একটি ‘মীমাংসিত বিষয়’ বলে ঘোষণা করেন-
লর্ড মর্লে
বঙ্গভঙ্গের প্রথম দিকে ব্রিটিশ সরকার বঙ্গভঙ্গের ব্যাপারে দৃঢ় ও অনমনীয় মনোভাব প্রদর্শন করেন। ভারত সচিব মর্লে বঙ্গ বিভাগকে একটি মীমাংসিত বিষয় বলে ঘোষণা করেন এবং কংগ্রেস কর্তৃক তা বাতিলের দাবি নাকচ করে দেন। এমনকি দমন
সিমলা ডেপুটেশনে নেতৃত্ব দেন
আগা খান
১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ করে নতুন প্রদেশ গঠন করা হলে অধিকতর সুযোগ-সুবিধা লাভের আশায় পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশের মুসলমানরা একে স্বাগত জানায়।
কিন্তু হিন্দু সম্প্রদায় কংগ্রেস সরকারের এ উদ্যোগের তীব্র বিরোধিতা করে এবং বঙ্গভঙ্গ রদ করার জন্য সর্বাত্মক আন্দোলন শুরু করে। হিন্দুদের বিশেষ করে কংগ্রেসের এ ভূমিকা ভারতীয় মুসলমানদের দারুণভাবে মর্মাহত ও বিক্ষুব্ধ করে। তারা বুঝতে পারে যে, স্বতন্ত্র রাজনৈতিক সংগঠন ব্যতীত তাদের স্বার্থ সংরক্ষণ অসম্ভব। এসময় ব্রিটিশ সরকার ভারতের শাসনতান্ত্রিক সংস্কারের কথা ব্যক্ত করে।
১৯০৬ সালের ১ অক্টোবর আগা খানের নেতৃত্বে ৩৫ সদস্যের একটি মুসলিম প্রতিনিধি দল সিমলায় বড়লাট মিন্টোর সাথে দেখা করে তাদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া তুলে ধরেন। ইতিহাসে এটি ‘সিমলা ডেপুটেশন’ নামে খ্যাত।
বড় লাট মুসলমানদের দাবিগুলো সম্পর্কে সদয় বিবেচনার আশ্বাস দেন। এ ঘটনা ভারতীয় মুসলমানদের মধ্যে নবউদ্দীপনা ও আশার সঞ্চার করে।
ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত বিপ্লবী গুপ্ত সমিতি অনুশীলনের প্রধান ছিলেন -
পুলিন বিহারী দাস
বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়েছিল নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন হিসেবে। তবে কংগ্রেসের কিছু উগ্র ও চরমপন্থী নেতার প্ররোচনায় আন্দোলনকারীদের একাংশ সন্ত্রাসী ও উগ্রপন্থী কার্যকলাপ শুরু করে।
ঢাকা ও কলকাতা শহরকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন গুপ্ত সমিতি গঠিত হয়। ব্যারিস্টার প্রথমনাথ মিত্র ঢাকায় ‘অনুশীলন সমিতি’ গঠন করেন। পুলিন বিহারী দাসকে এটি পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়।
সিপাহী বিদ্রোহের নেতা কে ছিলেন?
মঙ্গলপান্ডে
বাঁশের কেল্লাখ্যাত স্বাধীনতা সংগ্রামী কে?
তিতু্মীর
পাক-ভারত- বাংলা এই উপমহাদেশের প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ কোন সনে শুরু হয়?
১৮৫৭
গান্ধী স্মৃতি জাদুঘর’ কোন জেলায় অবস্থিত?
নোয়াখালী
নিচের কোনটি তেতাল্লিশের দুর্ভিক্ষ নিয়ে নয়?
স্বদেশী বান্ধব।
স্বদেশী বান্ধব তেতাল্লিশের দুর্ভিক্ষ নিয়ে নয়।
১৯৪৩ সালে বাংলায় সংঘটিত দুর্ভিক্ষ পঞ্চাশের মন্বন্তর/তেতাল্লিশের দুর্ভিক্ষ নামে পরিচিত। বাংলা ১৩৫০ সালে এই দুর্ভিক্ষ সংঘটিত হওয়ায় এটিকে পঞ্চাশের মন্বন্তর বলা হয়।
এ দুর্ভিক্ষে প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষ মারা যায়। এ দুর্ভিক্ষের জন্যে কৃত্রিম সংকটকে দায়ী করা হয়। এ দুর্ভিক্ষকে কেন্দ্র করে শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
☛ পঞ্চাশের মন্বন্তর নিয়ে বিশেষ তথ্য:
সেই সময় ভারতের গভর্নর জেনারেল ছিলেন: লর্ড ওয়াভেল।
তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী: উইনস্টল চার্চিল
কারণ: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপান বার্মা দখলের ফলে চাল আমদানি বন্ধ, ১৯৪০ সালের ঘূর্ণিঝড় ও ১৯৪৩ সালে কলকাতায় জাপানের বিমান হামলা।
দুর্ভিক্ষকে কেন্দ্র করে গ্রন্থ: মধুশ্রী মুখোপাধ্যায়ের Churchill’s Secret War. নির্মিত চলচ্চিত্র: মৃণাল সেনের ‘অকালের সন্ধানে’ (১৯৭০), সত্যজিৎ রায়ের ‘অশনি সংকেত’ (১৯৭৩)।
নির্মিত চিত্রকর্ম: জয়নুল আবেদীনের ‘ম্যাডোনা-৪৩’।
অন্যদিকে,
স্বদেশী বান্ধব স্বদেশী আন্দোলনের সমর্থনে গঠিত একটি সমিতি।
আরব-ইরান থেকে বাঙালি মুসলমানদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন’’, কে বলেছিলেন?
বদরুদ্দীন উমর।
বদরুদ্দীন উমর বলেছিলেন, ‘‘আরব-ইরান থেকে বাঙালি মুসলমানদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন’‘।
১৯৪৭ সালে মুসলমান অধ্যুষিত যে জেলাটি পশ্চিম বাংলার অন্তর্ভুক্ত ছিল না-
মেহেরপুর
১৯৪৭ সালে মুসলমান অধ্যুষিত মেহেরপুর জেলাটি পশ্চিম বাংলার অন্তর্ভুক্ত ছিল না।
☛ ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর মুসলমান অধ্যুষিত যে জেলাগুলো পশ্চিম বাংলার অর্ন্তভুক্ত হয়- মালদহ, মুর্শিদাবাদ ও নদীয়া।
☛ মালদহ, মুর্শিদাবাদ ও নদীয়ার ক্ষতিপূরণ স্বরূপ পূর্ব বাংলায় অন্তভুক্ত হয়- পার্বত্য চট্টগ্রাম।
নীল বিদ্রোহের প্রথম শহিদ-
বিশ্বনাথ সর্দার।
নীল বিদ্রোহের প্রথম শহিদ বিশ্বনাথ সর্দার।
☛ নীল বিদ্রোহ নিয়ে বিশেষ তথ্য:
১৮৫০ এর দশকের শেষ ভাগে নদীয়া ও যশোরাঞ্চলে নীল চাষীদের দ্বারা নীল বিদ্রোহের সূত্রপাত হয়। ১৮৫৯ সালের দিকে নীল বিদ্রোহ চরম আকার ধারণ করে এবং নীল চাষের অধীন অন্যান্য এলাকায়ও ছড়িয়ে পড়ে।
বিদ্রোহের সময়কাল- ১৮৫৯-১৮৬২
নীল প্রতিরোধ আন্দোলনের প্রথম প্রবাদ পুরুষ- বিশ্বনাথ সর্দার
প্রথম নীল বিদ্রোহের সূচনা- কুষ্টিয়া ও যশোরের চৌগাছা থেকে
নীল কমিশন গঠন- ১৮৬০ সালের ৩১ মার্চ। এটার রিপোর্ট প্রকাশ হয় ১৮৬১ সালে।
নীল বিদ্রোহে প্রথম শহিদ- বিশ্বনাথ সর্দার
নওয়াব আব্দুল লতিফ- যশোরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট যিনি নীল চাষীদের পক্ষে রায় দেন।
কৃত্রিম নীল আবিষ্কার- ১৮৯২
নীল চাষের নামে জেলার নামকরণ- নীলফামারী
নীল বিদ্রোহ নিয়ে নাটক ও গ্রন্থ-
- নীল দর্পণ (১৮৬০); দীনবন্ধু মিত্র (প্রকাশিত হয় বেনামে)
- নীল বিদ্রোহ ও বাঙালি সমাজ; ড: প্রমোদরঞ্জন সেন গুপ্ত
কৃত্রিম নীল আবিষ্কৃত হলে ১৮৯২ সালে বাংলা থেকে নীল চাষ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
যে আইনের মাধ্যমে বার্মাকে ভারতবর্ষ থেকে পৃথক করা হয়-
ভারত শাসন আইন, ১৯৩৫।
ভারত শাসন আইন, ১৯৩৫-এর মাধ্যমে বার্মাকে ভারতবর্ষ থেকে পৃথক করা হয়।
১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইন (The Govt. of India Act, 1935 ):
☛ পটভূমি: ১৯২৬ সালে ঢাকা ও কলকাতায় হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা হলে ব্রিটিশ সরকার একটি ‘ভারত শাসন আইন প্রনয়নের আনা ১৯২৭ সালে সাইমন কমিশন গঠন করে। এই কমিশনের বিরুদ্ধে হিন্দুরা ১৯২৮ সালে দেয় “নেহরু রিপোর্ট’’ ও ১৯২৯ সালে মুসলিমদের পক্ষে দেয়া হয় ‘‘জিন্নাহর চৌদ্দ দফা”।
পরবর্তীতে সাইমন কমিশন, নেহরু রিপোর্ট ও চৌদ্দ দফা নিয়ে ১৯৩০, ১৯৩১ ও ১৯৩২ সালে লন্ডনে অনুষ্ঠিত হয় তিনটি গোলটেবিল বৈঠক। এই বৈঠকের পরে ১৯৩৫ সালে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে পাস হয় ‘ভারত শাসন আইন-১৯৩৫’।
☛ ম্যাকডোনাল্ড সাম্প্রদায়িক রোয়েদাদ: ১৯৩২ সালে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ম্যাকডোনাল্ড আইনসভায় বিভিন্ন সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি বণ্টনসহ ভারতের জন্য একটি ভবিষ্যৎ সংবিধানের রূপরেখা ঘোষণা করেন, যা ‘ম্যাকডোনানাল্ড সাম্প্রদায়িক রোয়েদাদ’ নামে খ্যাত।
☛ ভারত শাসন আইনের (১৯৩৫) বিষয়বস্তু:
-পাশ: ১৯৩৫ সালের ২ আগস্ট
-কার্যকর: ১৯৩৭ সালের ১ এপ্রিল
-প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল: যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার পদ্ধতি ও প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন (Provincial Autonomy)
-এই আইনের ফলে:
১. বার্মা (মিয়ানমার) উপমহাদেশ থেকে পৃথক হয় (কার্যকর: ১৯৩৭)।
২. প্রাদেশিক নির্বাচনের সূচনা ঘটে।
৩. উপমহাদেশে নারীরা প্রথম ভোটাধিকার পায় (ভোট প্রদান: ১৯৩৭)।
৪. কেন্দ্রীয় আইনসভা হয় দ্বিকক্ষবিশিষ্ট যথাক্রমে:
ক. রাষ্ট্রীয় সভা (Council of State) (উচ্চকক্ষের নাম)।
খ. ব্যবস্থাপক/যুক্তরাষ্ট্রীয় সভা (Federal Assembly) (নিম্ন কক্ষের
নাম)।
১৮৫৭ সালের প্রথম স্বাধীনতা আন্দোলন শুরু হয় কোথা থেকে?
মিরাট।
১৮৫৭ সালের প্রথম স্বাধীনতা আন্দোলন শুরু হয় মিরাট
থেকে।
সিপাহী বিদ্রোহকে ১৮৫৭ সালের প্রথম স্বাধীনতা আন্দোলন বলা হয়।
☛ সিপাহি বিদ্রোহকে ভারতের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম বলা হয়। এটাকে মহাবিদ্রোহ এবং ভারতীয় বিদ্রোহও বলা হয়। ১৮৫৭ সালের ২৯শে মার্চ পশ্চিমবঙ্গের ব্যারাকপুরে মঙ্গলপাণ্ডে নামে একজন সিপাহী কর্তৃক গুলি বর্ষণের মাধ্যমে এই বিদ্রোহের সূত্রপাত ঘটে।
সিপাহি বিদ্রোহ পরবর্তীতে ভারতবর্ষের উত্তর ও পূর্বাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই বিদ্রোহ ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। তবে সিপাহি বিদ্রোহের ফলে ভারতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনের অবসান ঘটে। ভারতের শাসনভার ব্রিটিশ সরকার সরাসরি তার হাতে নিয়ে নেয়।
বিদ্রোহের আনুষ্ঠানিক সূচনা: ১০ মে, ১৮৫৭ (মিরাটের সৈন্যরা প্রথম বিদ্রোহ করে)
বিদ্রোহের নেতৃত্বদানকারী: মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ।
সিপাহি বিদ্রোহের স্মরণীয় স্থান: বাহাদুর শাহ পার্ক।
*** সিপাহী বিদ্রোহ দমন করেন লর্ড ক্যানিং।