বাংলাদেশের ইতিহাস : সুলতানী আমল-১ Flashcards
বাংলার স্বাধীনতার সূচনা করেন?
ফখরুদ্দিন মুবারক শাহ।
বাংলার স্বাধীনতার সূচনা করেন ফখরুদ্দিন মুবারক শাহ।
১৩৩৮ সালে সোনারগাঁওয়ের শাসনকর্তা বাহরাম খানের মৃত্যু হয়। বাহরাম খানের বর্মরক্ষক ছিলেন ‘ফখরা’ নামের একজন রাজকর্মচারী। প্রভুর মৃত্যুর পর তিনি স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং ‘ফখরুদ্দিন মুবারক শাহ্’ নাম নিয়ে সোনারগাঁওয়ের সিংহাসনে বসেন।
তিনি ১৩৪৯ থেকে ১৩৫২ পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন।
তিনি মুদ্রার নাম দেন ‘ফখরা’। তাঁর রাজধানী ছিল: সোনারগাঁও।
তবে বাংলার প্রথম প্রকৃত স্বাধীন সুলতান শামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহ।
দিল্লির শাসকদের মধ্যে কোন সম্রাট প্রথম স্থায়ী সেনাবাহিনী গড়ে তুলেন?
আলাউদ্দিন খলজি।
দিল্লির শাসকদের মধ্যে আলাউদ্দিন খলজি প্রথম স্থায়ী সেনাবাহিনী গড়ে তুলেন।
আলাউদ্দিন খলজি ছিলেন দিল্লির শ্রেষ্ঠ সুলতান। তাকে ভারতের আলেক্সান্ডার বলা হয়।
তিনি দ্রব্যমূল্য ও বাজার নিয়ন্ত্রণ করেন।
দিল্লির শাসকদের মধ্যে তিনিই প্রথম স্থায়ী সেনাবাহিনী গড়ে তুলেন।
পারস্যের কোন কবি গিয়াসউদ্দিন আজম শাহকে দিওয়ান লিখে পাঠিয়েছিলেন?
হাফিজ সিরাজি (সংক্ষেপে হাফিজ)
পারস্যের কবি হাফিজ সিরাজি গিয়াসউদ্দিন আজম শাহকে দিওয়ান লিখে পাঠিয়েছিলেন।
গিয়াসউদ্দিন আজম শাহ পন্ডিত ও কবিদের সমাদর করতেন। পারস্যের কবি হাফিজের সাথে তার পত্র বিনিময় হত। বাঙালি মুসলিম কবি শাহ মুহম্মদ সগীর তার বিখ্যাত রচনা ইউসুফ জুলেখা এ সময়ে সম্পন্ন করেন।
আমির খসরু কার সভাকবি ছিলেন?
গিয়াসউদ্দিন বলবন।
আমির খসরু গিয়াসউদ্দিন বলবনের সভাকবি ছিলেন। তিনি ছিলেন একাধারে সঙ্গীতজ্ঞ, কবি, গায়ক, সুফি, দার্শনিক ও যোদ্ধা। প্রধানত ফার্সি ও হিন্দি ভাষায় তিনি গান ও কবিতা লিখতেন। অসাধারণ গান ও কবিতার মাধ্যমে তিনি ভক্তদের কাছ থেকে উপাধি পেয়েছিলেন ‘তুত-ই-হিন্দ’ বা ‘ভারতের তোতা পাখি হিসেবে।আমির খসরু কে ‘ভারতের তোতাপাখি’ বলা হয়।
গিয়াসউদ্দিন বলবন ‘রক্তপাত ও কঠোর নীতি’ এর প্রবর্তক। এছাড়া বিদ্যোৎসাহী ও গুণীজনের পৃষ্ঠপোষকও ছিলেন।
বাংলার প্রথম স্বাধীন সুলতান-
ফকরুদ্দিন মোবারক শাহ।
বাংলার প্রথম স্বাধীন সুলতান ছিলেন ফকরুদ্দিন মোবারক শাহ।
১৩৩৮ সালে মারা যান সোনারগাঁওয়ের শাসনকর্তা বাহরাম খাঁন। তাঁর বর্মরক্ষক ছিলেন ‘ফখরা’।
প্রভুর মৃত্যুর পর তিনি সোনারগাঁওয়ের সিংহাসনে বসেন।
১৩৩৮ সালে তিনি সোনারগাঁওয়ের শাসনক্ষমতা দখল ও স্বাধীনতা ঘোষনা করেন।
ফকরুদ্দিন মোবারক শাহ নিজনামে মূদ্রা জারি করেছিলেন।
বাংলাদেশের কোন স্বাধীন সুলতান ‘জগৎ ভূষণ’ ও ‘নৃপতি তিলক’ উপাধিতে ভূষিত হন?
আলাউদ্দীন হুসেন শাহ।
বাংলাদেশের স্বাধীন সুলতান আলাউদ্দীন হুসেন শাহ ‘জগৎ ভূষণ’ ও ‘নৃপতি তিলক’ উপাধিতে ভূষিত হন।
তিনি ছিলেন সুলতানী আমলে হুসেন শাহী বংশের প্রথম ও শ্রেষ্ঠ শাসক। তার শাসনকালকে মুসলমান শাসনের স্বর্ণযুগ বলা হয়।
তাঁর শাসনকালেই আবির্ভাব ঘটে বৈষ্ণব ধর্মের প্রচারক শ্রীচৈতন্যে দেবের এবং মালাধর বসু ‘শ্রীমস্তগবদু’ ও ‘পুরাণ’ এবং পরমেশ্বর ‘মহাভারত’ বাংলা ভাষায় অনুবাদ করেন। তিনি নির্মাণ করেন গৌড়ের ছোট সোনা মসজিদ।
বাংলাদেশের নাম ‘বুলগাকপুর’ দিয়েছিলেন কে?
জিয়াউদ্দিন বারানী।
বাংলাদেশের নাম ‘বুলগাকপুর’ দিয়েছিলেন জিয়াউদ্দিন বারানী।
জিয়াউদ্দিন বারানি (১২৮৫-১৩৫৭) ছিলেন সুলতান মোহাম্মদ বিন তুঘলক ও ফিরোজ শাহ তুঘলকের সময় দিল্লি সালতানাতের একজন মুসলিম ইতিহাসবিদ ও রাজনৈতিক চিন্তাবিদ। তার রচিত তারিখ-ই-ফিরোজশাহী বইর জন্য তিনি অধিক পরিচিত।এ যুগের শাসনকর্তাদের পুরোপুরি স্বাধীন বলা যাবে না। শাসকদের সকলেই দিল্লির সুলতানদের অধীনে বাংলার শাসনকর্তা হয়ে এসেছিলেন।
পরবর্তীকালে অনেক শাসনকর্তাই দিল্লির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে স্বাধীন হতে চেয়েছেন। তবে তাঁদের বিদ্রোহ শেষ পর্যন্ত সফল হয়নি। দিল্লির আক্রমণের মুখে তা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। মুসলিম শাসনের এ যুগ ছিল বিদ্রোহ-বিশৃঙ্খলায় পূর্ণ। তাই ঐতিহাসিক জিয়াউদ্দিন বারানী বাংলাদেশের নাম দিয়েছিলেন ‘বুলগাকপুর’। এর অর্থ ‘বিদ্রোহের নগরী’।
তরাইনের যুদ্ধ (১১৯১ সাল) পরিচালনা করেন কে?
শিহাব উদ্দিন মোহাম্মদ ঘুরি।
শিহাব উদ্দিন মোহাম্মদ ঘুরি ১১৯১ সালে প্রথম তরাইনের যুদ্ধ পরিচালনা করেন এবং পরাজিত হন।
পরবর্তীতে ১১৯২ সালে দ্বিতীয় তরাইনের যুদ্ধে পৃথ্বীরাজকে পরাজিত করেন এবং উপমহাদেশে অর্থাৎ ভারতবর্ষে মুসলিম শাসনের সূচনা ঘটে।
বাংলার কোন সুলতান ‘খলিফাতুল্লাহ’ উপাধি গ্রহণ করেন?
জালালউদ্দিন মুহাম্মদ শাহ।
বাংলার সুলতান জালালউদ্দিন মুহাম্মদ শাহ ‘খলিফাতুল্লাহ’ উপাধি গ্রহণ করেছিলেন।
মহারাজ গণেশ ছিলেন বাংলার একজন হিন্দু শাসক। তিনি বাংলার ইলিয়াস শাহি রাজবংশকে ক্ষমতাচ্যুত করে ক্ষমতায় এসে সমগ্র বাঙ্গালা জুড়ে স্বাধীন হিন্দু সাম্রাজ্য স্থাপন করেন। তাঁর পুত্র সুলতান যদুনারায়ণ বা জালালউদ্দিন মুহাম্মদ শাহ।
জালালউদ্দিন মুহাম্মদ শাহ এর পৃষ্ঠপোষকতায় কৃত্তিবাস রামায়ন রচনা করেন।
দানশীলতার জন্য লাখবক্স হিসেবে পরিচিত ছিলেন কোন সম্রাট?
কুতুব উদ্দিন আইবেক।
দানশীলতার জন্য লাখবক্স হিসেবে পরিচিত ছিলেন কুতুব উদ্দিন আইবেক।
তিনি দিল্লিতে স্থায়ী মুসলিম শাসনের গোড়াপত্তন করেন।
তিনি সমগ্র হিন্দুস্তানের প্রথম সম্রাট।
ফকির বাদশাহ নামে পরিচিত ছিলেন কোন সম্রাট?
সুলতান নাসির উদ্দিন মাহমুদ।
সুলতান নাসির উদ্দিন মাহমুদের শাসনকাল: ১২৪৬–১২৬৬।
তিনি সুলতান ইলতুতমিশের পুত্র ছিলেন।
সুলতান নাসির উদ্দিন মাহমুদ ফকির বাদশাহ নামে পরিচিত ছিলেন।
বাঙ্গালাহ নামের প্রচলন করেন?
শামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহ।
বাঙ্গালাহ নামের প্রচলন করেন শামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহ।
তিনি ছিলেন সমগ্র বাংলার অধিপতি হওয়া প্রথম মুসলিম। তাঁর উপাধি ছিল ‘শাহ্-ই-বাঙ্গালা’ ও ‘শাহ-ই-বাঙালিয়ান’। তার সময় হতেই বাংলার অধিবাসীগণ পরিচিতি পায় বাঙালি নামে।
মুসলমান শাসকদের মধ্যে প্রথম মূদ্রা প্রচলক কে?
শামসুদ্দিন ইলতুতমিশ।
মুসলমান শাসকদের মধ্যে প্রথম মূদ্রা প্রচলক ছিলেন শামসুদ্দিন ইলতুতমিশ।
তিনি দিল্লির মামলুক সালতানাতের একজন সুলতান ছিলেন। তিনি ১১৮০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তাকে দিল্লি সালতানাতের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা বলা হয়।
বাংলার প্রাচীনতম বন্দরের নাম কী?
তাম্রলিপ্ত।
তাম্রলিপ্ত প্রাচীন বাংলার একটি প্রধান বন্দর নগরী। বর্তমান ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর জেলায় অবস্থিত নগরী।
তাম্রলিপ্ত ছিল কলিঙ্গ রাজ্যের প্রধানতম বন্দর। ঐতিহাসিকদের মতে সম্রাট অশোক তাম্রলিপ্ত বন্দর দখল করার জন্যই কালিঙ্গের সাথে যুদ্ধ করেন। এটি দখল করার পর মৌর্য সাম্রাজ্যের প্রধান নৌ বন্দরে পরিণত হয়।
বাংলায় মারাঠাদের ধারণা পাওয়া যায় কোন আমলে?
মুঘল আমল।
বাংলায় মারাঠাদের ধারণা পাওয়া যায় মুঘল আমলে।
মারাঠা বা মারাঠি একটি ভারতীয় জাতিগোষ্ঠী, যাদের মহারাষ্ট্র রাজ্যে প্রধানত দেখা যায়। এ ছাড়া মধ্য প্রদেশ, গুজরাট, কর্ণাটক ও গোয়া অঞ্চলে এরা বসতি গড়ে তোলে। মারাঠাদের ভাষাকে বলা হয় মারাঠি।
বাংলা থেকে মারাঠি দস্যুদের দমন করেন নবাব আলীবর্দী খান।