বাংলাদেশের ইতিহাস : প্রাচীন যুগ -৩ Flashcards
ময়নামতির পূর্ব নাম কি ছিল?
রােহিতগিরি।
ময়নামতির পূর্ব নাম ছিল রোহিতগিরি।
ময়নামতি বাংলাদেশের কুমিল্লায় অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক স্থান। এটার অপর নাম শালবন বিহার। এটা নির্মাণ করেন রাজা দেবপাল।
এখানের বিখ্যাত পুরাকীর্তি: আনন্দ বিহার, আনন্দ রাজার দীঘি, রানির বাংলা বিহার, ভোজ বিহার, কোটিলা মুড়া, রূপবান মুড়া, বৈরাগীর মুড়া ও চারপত্র মুড়া।
অশােক কোন বংশের শাসক ছিলেন?
মোর্য
ভারতে মৌর্য শাসনের প্রতিষ্ঠাতা চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য।
ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম সাম্রাজ্যের নাম মৌর্য সাম্রাজ্য। ভারতে মৌর্যবংশ প্রতিষ্ঠা করেন চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য। এই বংশের রাজত্বকাল ছিল ৩২৪ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ থেকে ১৮৬ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ।
মৌর্য শাসনের প্রতিষ্ঠাতা- চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য ।
মৌর্য বংশের তৃতীয় এবং শ্রেষ্ঠ সম্রাট - অশোক।
অশোকের (২৬৯–২৩২খ্রি.পূ.) রাজত্বকালে উত্তর বাংলার বৃহদাংশ মৌর্যদের দখলে গিয়েছিল বলে জোরালো ঐতিহাসিক অভিমত রয়েছে।
চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের শাসনের সময় গ্রীক দেশ থেকে পর্যটক আসেন- মেগাস্থিনিস।
সমতট জনপদ বর্তমান কোন অঞ্চল জুড়ে বিস্তৃত ছিল?
নোয়াখালী অঞ্চল।
প্রাচীন বাংলা কতগুলো অঞ্চল বা জনপদে বিভক্ত ছিল। এদের মধ্যে ‘বঙ্গ’ জনপদ ছিলো অন্যতম। বৃহত্তর ফরিদপুর, বিক্রমপুর, বাখেরগঞ্জ, পটুয়াখালীর নিচু জলাভূমি নিয়ে ‘বঙ্গ’ জনপদ গঠিত হয়েছিল।
সমতট জনপদ বর্তমান বৃহত্তর নোয়াখালী ও কুমিল্লা অঞ্চল জুড়ে বিস্তৃত ছিলো।
বরেন্দ্র জনপদ বর্তমান রাজশাহী, রংপুর ও দিনাজপুর অঞ্চল জুড়ে বিরাজমান ছিলো।
হরিকেল জনপদ আধুনিক সিলেট থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম পর্যন্ত বিস্তৃত ছিলো।
জগদ্দল বিহার’ কোন জেলায় অবস্থিত?
নওগাঁয়।
জগদ্দল বিহার নওগা জেলার ধামুরহাট উপজেলায় অবস্থিত।
এটি নির্মাণ করেন পাল রাজা রামপাল।
একাদশ-দ্বাদশ শতাব্দীতে এই বিহার নির্মিত হয় বলো ধারণা করা হয়।
প্রাচীন বাংলায় কোন গোত্রের লোকদের পেশা ছিল ব্যবসা-বাণিজ্য?
বৈশ্য।
কোনো সমাজে বর্ণপ্রথা একেবারে শুরুতে থাকে না। বাংলা তথা ভারতীয় সমাজে আর্য সংস্কার ও সংস্কৃতির বিস্তার হিসেবেই বর্ণপ্রথা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
ব্রাহ্মণ - অধ্যয়ন, অধ্যাপনা ও পূজা-পার্বণ করা- এগুলাে ছিল ব্রাহ্মণদের নির্দিষ্ট কর্ম। তারা সমাজে সর্বশ্রেষ্ঠ মর্যাদা লাভ করতাে।
ক্ষত্রিয় - ক্ষত্রিয়দের পেশা ছিল যুদ্ধ করা।
বৈশ্য - ব্যবসা-বাণিজ্য করা ছিল বৈশ্যদের কাজ।
শূদ্র - সবচেয়ে নীচু শ্রেণির শূদ্ররা সাধারণত কৃষিকাজ, মাছ শিকার ও অন্যান্য ছােটখাটো কাজ করত।
বাঙালি জাতিধারার নৃতাত্ত্বিক গঠনে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ থাকলেও কোন জাতির ভূমিকা সর্বাধিক?
অস্ট্রিক।
নৃতাত্ত্বিক গঠন প্রক্রিয়ার দিক থেকে বাঙালি জাতি হলো একটি সংকর জাতি।
বাঙালি জাতিধারার নৃতাত্ত্বিক গঠনে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ থাকলেও অস্ট্রিক জাতির ভূমিকা সর্বাধিক।
ইন্দোচীন থেকে আদি অস্ট্রেলীয় নরগোষ্ঠীর অন্তর্গত অস্ট্রিক জাতি প্রাক আর্য যুগে বাংলায় বসতি স্থাপন করে।
এই অস্ট্রিক নরগোষ্ঠী থেকেই বাঙালি জাতির প্রধান অংশ গড়ে উঠেছে।
অস্ট্রিক নরগোষ্ঠীর সাথে দ্রাবিড় ও আর্য জাতির সংমিশ্রণে বাঙালি জাতি গড়ে উঠেছে।
তবে ইতিহাসের নানা পর্যায়ে বাঙালি রক্তপ্রবাহে ভোটচীনীয়, ককেশীয়, ইংরেজ, পর্তুগিজ প্রভৃতি জাতিসত্ত্বার সংমিশ্রণ ঘটেছে।
কে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন?
ইন্দ্রগুপ্ত।
দেবপাল বিদ্যা ও বিদ্বানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। বিভিন্ন দেশের বৌদ্ধ পণ্ডিতগণ তাঁর রাজসভা অলঙ্কৃত করতেন। দেবপালের পৃষ্ঠপোষকতায় নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় তখন সমগ্র এশিয়ায় বৌদ্ধ সংস্কৃতির প্রধান প্রাণকেন্দ্র হয়ে উঠেছিল।
বৌদ্ধশাস্ত্রে পারদর্শী ইন্দ্রগুপ্ত নামক ব্রাহ্মণকে তিনি নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য বা অধ্যক্ষ নিযুক্ত করেছিলেন। এ নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করেই তার শাসন আমলে উত্তর-ভারতে প্রায় হারিয়ে যাওয়া বৌদ্ধধর্ম পুনরায় সজীব হয়ে ওঠে
উত্তর বঙ্গের বরেন্দ্র অঞ্চলের সামন্তবর্গ প্রকাশ্যে বিদ্রোহ ঘোষণা করে কোন রাজবংশের শাসন আমলে?
পালবংশ।
পাল বংশের শাসন আমলে সামান্তবর্গ উত্তর বঙ্গের বরেন্দ্র অঞ্চলে বিদ্রোহ ঘেষণা করেন।
তৃতীয় বিগ্রহপালের পুত্র দ্বিতীয় মহীপাল পাল সিংহাসনে আহরণের পর পাল রাজ্যে দুর্যোগ আরও ঘনীভূত হয়। এ সময় উত্তর বঙ্গের বরেন্দ্র অঞ্চলের সামন্তবর্গ প্রকাশ্যে বিদ্রোহ ঘোষণা করে। ইতিহাসে এ বিদ্রোহ কৈবর্ত বিদ্রোহ’ নামে পরিচিত।
এ বিদ্রোহের নেতা ছিলেন কৈবর্ত নায়ক দিব্যোক বা দিব্য। তিনি দ্বিতীয় মহীপালকে হত্যা করে বরেন্দ্র দখল করে নেন এবং নিজ শাসন প্রতিষ্ঠা করেন।
পরবর্তীতে রামপাল যুদ্ধে কৈবর্তরাজ ভীমকে পরাজিত ও নিহত করে উত্তর বঙ্গের বরেন্দ্র অঞ্চল পুনরায় দখল করেন।
নিচের কোনটি প্রাচীন বাংলার জনপদের অন্তর্ভুক্ত নয়?
চট্টলা।
চট্টলা প্রাচীন বাংলা জনপদের অন্তর্ভুক্ত নয়।
প্রাচীন বাংলা জনপদসমূহ- বঙ্গ, গৌড়, সমতট, পুণ্ড্র, রাঢ় ইত্যাদি।
প্রাচীন বাংলার প্রথম স্বাধীন নরপতির নাম কী?
রাজা শশাঙ্ক।
শশাঙ্ক ছিলেন বাংলার প্রথম স্বাধীন ও সার্বভৌম রাজা।
প্রাচীন বাংলার প্রথম গুরুত্বপূর্ণ শাসক শশাঙ্ক।
তিনি বাংলার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজ্যকে একত্র করে গৌড় জনপদ গড়ে তুলেছিলেন।
সংকীর্ণ অর্থে পদ্মা ও ভাগীরথী নদীর মধ্যবর্তী অঞ্চলই গৌড়, কিন্তু সময়ের বিবর্তনে এক বিস্তৃত এলাকা এর অন্তর্ভুক্ত হয়।
শক্তিসঙ্গম তন্ত্রগ্রন্থের সপ্তম পটল ‘সটপঞ্চষদ্দেশবিভাগ’-এ বলা হয়েছে যে গৌড়ের সীমানা বঙ্গদেশ থেকে ভুবনেশ (উড়িষ্যার ভুবনেশ্বর) পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছিল।
তাঁর রাজধানীর নাম ছিল কর্ণসুবর্ণ বা কানসোনা, বস্তুত কর্ণসুবর্ণ ছিল তৎকালীন বিখ্যাত একটি নগরী।
পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলায় রাজবাড়িডাঙ্গার (রক্তমৃত্তিকা মহাবিহারের প্রত্নস্থল অথবা আধুনিক রাঙামাটি) সনি্নকটে চিরুটি রেলস্টেশনের কাছে এই নগরী অবস্থিত ছিল।
মাৎস্যন্যায়’ বলতে কী বোঝায়?
অরাজক পরিস্থিতি।
মাৎস্যন্যায় বলতে এক অরাজক পরিস্থিতিকে বোঝায়।
মাৎস্যন্যায় রাজা শশাঙ্ক এর মৃত্যুর পর থেকে পাল রাজবংশের অভ্যুদয়ের পূর্ব পর্যন্ত সময়ে বাংলার রাজনীতিতে চরম বিশৃঙ্খলাপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করে।
প্রায় সমসাময়িক লিপি, খালিমপুর তাম্রশাসন এবং সন্ধ্যাকর নন্দীর রামচরিতম কাব্যে পাল বংশের অব্যবহিত পূর্ববর্তী সময়ের বাংলার নৈরাজ্যকর অবস্থাকে ‘মাৎস্যন্যায়ম্’ বলে উল্লেখ করা হয়।
বাঙালি জাতি পরিচয়ের ঐতিহাসিক যুগ শুরু হয় -
গুপ্ত যুগে।
বাঙালি জাতি পরিচয়ের ঐতিহাসিক যুগ শুরু হয় গুপ্তযুগ (৩২০ খ্রি.- ৬৫০ খ্রি.) থেকে এবং এ যুগেই প্রথম ক্ষুদ্র রাজ্যপুঞ্জ গুলিকে নিয়ে গঠিত হয় বিশাল রাজ্য।
যেমন গুপ্তদের সাম্রাজ্যিক ছত্রছায়ায় প্রতিষ্ঠিত হয় ক্ষুদ্র রাজ্যের বদলে বৃহৎ রাজ্য যেমন পূর্ব ভারতের দক্ষিণাঞ্চলের বঙ্গরাজ্য ও উত্তরাঞ্চলের গৌড় রাজ্য।
বৃহৎবঙ্গের প্রথম এবং ঐতিহাসিকভাবে সুনির্দিষ্ট এবং শক্তিশালী শাসক শশাঙ্ক (খ্রিস্টপূর্ব আনু ৬০০ খ্রি.-৬২৫ খ্রি.) তাঁর দক্ষ শাসনের মাধ্যমে বাংলা ও বাঙালিকে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করেন।
তখন থেকেই বাঙালি জাতিসত্ত্বার যাত্রা শুরু এবং পাল ও সেন আমলে এসে সে সত্ত্বা আরো বিকশিত হয়ে বাঙালি জাতির শক্তিশালী ভিত্তি স্থাপন করে।
প্রাচীন বাংলায় কোন গোত্রের লোকদের পেশা ছিল অধ্যাপনা?
ব্রাহ্মণ।
কোনো সমাজে বর্ণপ্রথা একেবারে শুরুতে থাকে না। বাংলা তথা ভারতীয় সমাজে আর্য সংস্কার ও সংস্কৃতির বিস্তার হিসেবেই বর্ণপ্রথা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
ব্রাহ্মণ- অধ্যয়ন, অধ্যাপনা ও পূজা-পার্বণ করা- এগুলাে ছিল ব্রাহ্মণদের নির্দিষ্ট কর্ম । তারা সমাজে সর্বশ্রেষ্ঠ মর্যাদা লাভ করতাে।
ক্ষত্রিয়- ক্ষত্রিয়দের পেশা ছিল যুদ্ধ করা।
বৈশ্য- ব্যবসা-বাণিজ্য করা ছিল বৈশ্যদের কাজ।
শূদ্র- সবচেয়ে নীচু শ্রেণির শূদ্ররা সাধারণত কৃষিকাজ, মাছ শিকার ও অন্যান্য ছােটখাটো কাজ করত।
ব্রাহ্মণ ছাড়া বাকি সব বর্ণের মানুষ একে অন্যের সাথে মেলামেশা করতাে। বিচিত্র সব বর্ণ, উপবর্ণ ও শংকর বর্ণের সামাজিক বিন্যাস এতে গুরুত্ব পায়।
এভাবে বর্ণভেদ প্রথা ধর্মীয় বিশ্বাস ও আচারে প্রতিষ্ঠা পায়।
নিম্নবর্ণের ডোমদের বাস ছিল গ্রামের বাইরে। উচ্চবর্ণের লোকেরা এঁদের ছুঁতেন না।
নাব্যের রাজধানী ছিল-
বরিশাল।
নাব্যের রাজধানী ছিল বরিশাল।
প্রাচীন বঙ্গ জনপদ ২ ভাগে বিভক্ত ছিল- ✔ বিক্রমপুর: পদ্মার উত্তর পাড় এলাকা। মুন্সিগঞ্জ, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও নারায়ণগঞ্জ এলাকা।
✔ নাব্য: পদ্মার দক্ষিণের অঞ্চল। ফরিদপুর, বরিশাল, পটুয়াখালী অঞ্চল। রাজধানী ছিল- বরিশাল, যা রাজা ত্রৈলোক্যচন্দ্রের নামানুসারে চন্দ্রদ্বীপ নামে পরিচিত।
কোনটি চন্দ্রদ্বীপ এর অন্তর্ভুক্ত জেলা ছিল না?
রাজশাহী।
চন্দ্রদ্বীপ এর অন্তর্ভুক্ত জেলা ছিল না রাজশাহী।
চন্দ্রদ্বীপ (বঙ্গের অন্তর্ভুক্ত) এর অন্তর্ভুক্ত অঞ্চল ছিল- বরিশাল, পটুয়াখালি, বাগেরহাট, খুলনা ও গোপালগঞ্জ।
গঙ্গা ও ভাগিরথীর মাঝের অঞ্চল ছিল-
বঙ্গ।
গঙ্গা ও ভাগিরথীর মাঝের অঞ্চল ‘বঙ্গ’ নামে প্রমাণিত।
প্রাচীন জনপদ বঙ্গ এর অন্তর্ভুক্ত অঞ্চল বৃহত্তর ঢাকা, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর,
বরিশাল ও পটুয়াখালী। এটি আয়তনে বৃহত্তম ও স্বাধীন জনপদ।
✔ বঙ্গ ও বাঙ্গালির পরিচয়: ঋগবেদের ‘ঐতরেয় আরণ্যক’ গ্রন্থে প্রথম ‘বঙ্গ’ শব্দের উল্লেখ পাওয়া যায়। মহাভারতের বর্ণনায় বঙ্গ অঞ্চল পুন্ড্র, তাম্রলিপি ও সূহ্মের সংলগ্ন।
কালিদাসের গ্রন্থে বঙ্গ অঞ্চলের উল্লেখ পাওয়া যায়। বর্তমান বাংলাদেশের পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব দিকে বাস করা ‘বঙ্গ’ নামের এক জাতি হতে ‘বঙ্গ’ নামের উদ্ভব হয়েছে বলে মনে করা হয়।
একাদশ শতকের শেষ দিকে পাল বংশের শেষ পর্যায়ে বঙ্গ দুভাগে ভাগ হয়: উত্তর ও দক্ষিণ বঙ্গ। পদ্মা ছিল উত্তরাঞ্চলের উত্তর সীমা, দক্ষিণের বদ্বীপ অঞ্চল ছিল দক্ষিণ বঙ্গ।। পরবর্তীকালে কেশব সেন ও বিশ্বরূপ সেনের আমলেও বঙ্গের দুটি ভাগ পরিলক্ষিত হয়। তবে এবার নাম আলাদা।
একটি ‘বিক্রমপুর’ ও অপরটি ‘নাব্য’। প্রাচীন শিলালিপিতে ‘বিক্রমপুর’ ও ‘নাব্য’ নামে বঙ্গের দুটি অঞ্চলের নাম পাওয়া যায়। বর্তমান বিক্রমপুর পরগনা ও তার সাথে আধুনিক ইদিলপুর পরগনার কিয়দংশ নিয়ে ছিল বিক্রমপুর। নাবা বলে বর্তমানে কোনো জায়গার অস্তিত্ব নেই।
ধারণা করা হয়, ফরিদপুর, বরিশাল, পটুয়াখালীর নিম্ন জলাভূমি এ নানা অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত ছিল। বৃহত্তর বগুড়া, পাবনা, ময়মনসিংহ জেলার পশ্চিমাঞ্চল, ঢাকা, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, বৃহত্তর কুমিল্লা ও নোয়াখালীর কিছু অংশ নিয়ে বঙ্গ গঠিত হয়েছিল। ‘বঙ্গ’ থেকে ‘বাঙালি’ জাতির উৎপত্তি ঘটেছিল।
প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শনের দিক দিয়ে কোনটি ছিল প্রাচীন বাংলার সবচেয়ে সমৃদ্ধ জনপদ?
পুন্ড্র।
প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শনের দিক দিয়ে পুণ্ড্রই ছিল প্রাচীন বাংলার সবচেয়ে সমৃদ্ধ জনপদ।
বগুড়া হতে সাত মাইল দূরে মহাস্থানগড় প্রাচীন পুণ্ড্রবর্ধন নগরীর ধ্বংসাবশেষ বলে পণ্ডিতেরা অনুমান করেন। বাংলাদেশে প্রাপ্ত পাথরের চাকতিতে খোদাই করা সম্ভবত প্রাচীনতম শিলালিপি এখানে পাওয়া গেছে।
পুন্ড্র অন্তর্ভুক্ত অঞ্চল- বগুড়া ( মহাস্থানগড়), রাজশাহী, রংপুর ও দিনাজপুর অঞ্চল।
বাংলার সবচেয়ে প্রাচীন জনপদ। এর রাজধানী: পুন্ড্রনগর (মহাস্থানগড়, বগুড়া)। অত্যন্ত সমৃদ্ধ জনপদ ছিলো।
রাঢ় অঞ্চলের রাজধানী ছিল-
কোটিবর্ষ।
রাঢ় অঞ্চলের রাজধানী ছিল-কোটিবর্ষ।
বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার দক্ষিণ অংশে ছিল রাঢ়ের অবস্থান।ভাগীরথী নদীর পশ্চিম তীর। রাজধানী ছিল কোটিবর্ষ। রাঢ়ের আরেক নাম ছিল সুহ্ম।
প্রাচীন জনপদ সমতট এর রাজধানী ছিল?
বড় কামতা।
সমতটের রাজধানী ছিল বড় কামতা (রোহিতগিরি)। এর অন্তর্ভুক্ত অঞ্চল ছিল বৃহত্তর কুমিল্লা, নোয়াখালী ও ত্রিপুরা অঞ্চল [গঙ্গা-ভাগীরথীর পূর্ব তীর থেকে
মেঘনার মোহনা পর্যন্ত]।
রাজধানী ছিল কুমিল্লা থেকে ১২ মাইল পশ্চিমে বড় কামতা (রোহিতগিরি)।
সমতট ও হরিকেল ভ্রমণ করেন-
হিউয়েন সাং।
সমতট ও হরিকেল ভ্রমণ করে- হিউয়েন সাং [৭ম শতকে]।
হর্ষবর্ধনের আমলে হিউয়েন সাং উপমহাদেশের ভ্রমণ করেন। তিনি চীনা পরিব্রাজক ছিলেন।
গঙ্গা-করতোয়ার মধ্যবর্তী অঞ্চল ছিল-
বরেন্দ্র।
গঙ্গা-করতোয়ার মধ্যবর্তী অঞ্চল ছিল-বরেন্দ্র।
রাজশাহী বিভাগের উত্তর পশ্চিমাংশ, বগুড়ার পশ্চিমাংশ, রংপুর ও দিনাজপুরের কিছু অংশ নিয়ে এই জনপদ গঠিত। এটি পুণ্ড্রের অংশ ছিল। এটি শক্ত মাটির জনপদ
বঙ্গাল’ শব্দের উল্লেখ পাওয়া যায় কোন গ্রন্থে?
কিতাব-আল-রেহালা।
‘বঙ্গাল’ শব্দের উল্লেখ পাওয়া যায় ইবনে বতুতার ‘কিতাব-আল-রেহালা’ গ্রন্থে।
কোন নদীটি বঙ্গ জনপদের উত্তরাঞ্চলের সীমানায় ছিল?
পদ্মা।
বঙ্গ জনপদের উত্তরাঞ্চলের সীমানায় ছিল পদ্মা।
বঙ্গ জনপদ দুইভাগে বিভক্ত ছিল। তার মধ্যে পদ্মার উত্তর পার এলাকা ছিল বিক্রমপুর, এবং দক্ষিণের অঞ্চল ছিল নাব্য।
শালবন বিহার প্রত্নস্থলটি কোন জনপদে অবস্থিত-
সমতট।
শালবন বিহার প্রত্নস্থলটি সমতটে অবস্থিত।
সমতটের রাজধানী ছিল বড় কামতা (রোহিতগিরি)। এর অন্তর্ভুক্ত অঞ্চল ছিল বৃহত্তর কুমিল্লা, নোয়াখালী ও ত্রিপুরা অঞ্চল [গঙ্গা-ভাগীরথীর পূর্ব তীর থেকে
মেঘনার মোহনা পর্যন্ত]।
রাজধানী ছিল কুমিল্লা থেকে ১২ মাইল পশ্চিমে বড় কামতা (রোহিতগিরি)।
বান্দরবান কোন জনপদের অন্তর্ভুক্ত ছিল?
হরিকেল।
বান্দরবান হরিকেল জনপদের অন্তর্ভুক্ত ছিল।
পার্বত্য সিলেট, চট্টগ্রাম এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চল হরিকেল জনপদের অন্তর্ভুক্ত ছিল।
হিদাসপিসের যুদ্ধ’’ কাদের মধ্যে সংঘটিত হয়েছিল?
আলেক্সান্ডার-পুরু।
'’হিদাসপিসের যুদ্ধ’’ আলেক্সান্ডার ও পুরুর মধ্যে সংঘটিত হয়েছিল। আলেক্সান্ডার
৩২৭-৩২৬ অব্দে ভারত আক্রমণ করেন।
ভারতের প্রথম সম্রাট কে ছিলেন?
চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য।
ভারতের প্রথম সম্রাট ছিলেন চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য।
চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য মগধের রাজা নন্দকে পরাজিত করে মৌর্য সাম্রাজ্য
প্রতিষ্ঠা করেন। আলেক্সান্ডার এর মৃত্যুর পর চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য আলেকজান্ডারের সেনাপতি সেলিওকাসকে পরাজিত করে উপমহাদেশ থেকে গ্রিকদের তাড়িয়ে দেন।
গ্রিক দূত মেগাস্থিনিস ভারতে আসেন কোন সম্রাটের আমলে?
চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য।
গ্রিক দূত মেগাস্থিনিস ভারতে আসেন কোন চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য-র আমলে। মেগাস্থিনিস কিন্তু বাংলায় আসেননি। মেগাস্থিনিসের গ্রন্থের নাম-ইন্ডিকা।
চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য এর প্রধানমন্ত্রী ছিলেন?
চাণক্য।
চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য এর প্রধানমন্ত্রী ছিলেন চাণক্য। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে পাণ্ডিত্যের জন্য চাণক্যকে ভারতের ‘ম্যাকিয়াভেলি’ বলা হয়। তার ছদ্মনাম কৌটিল্য বা বিষ্ণুগুপ্ত।
চাণক্য ছিলেন প্রাচীন ভারতীয় অর্থনীতিবিদ, দার্শনিক ও রাজ উপদেষ্টা।
তার রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ক বিখ্যাত গ্রন্থ- অর্থশাস্ত্র (১৫ খণ্ড)। চাণক্য অর্থনীতি ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপনা করেছেন- তক্ষশীলা বিশ্ববিদ্যালয়, পাকিস্তান।
তক্ষশীলা নগরী ছিল– অধুনা পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের একটি প্রাচীন বিদ্যাচর্চা কেন্দ্র। তিনি উপদেষ্টা ছিলেন- চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য ও বিন্দুসারের।
মৌর্য বংশের শ্রেষ্ঠ শাসক কে?
সম্রাট অশোক।
মৌর্য বংশের শ্রেষ্ঠ শাসক সম্রাট অশোক।
মৌর্য বংশের ৩য় সম্রাট অশোক। তিনি বাংলায় মৌর্য বংশের প্রতিষ্ঠাতা। ভারতবর্ষের ইতিহাসে অন্যতম শ্রেষ্ঠ এই সম্রাট দাক্ষিণত্যের কিছু অংশ ব্যতীত ভারতবর্ষের অধিকাংশ অঞ্চল শাসন।
বাংলায় মৌর্য বংশের প্রতিষ্ঠাতা কে?
সম্রাট অশোক।
বাংলায় মৌর্য বংশের প্রতিষ্ঠাতা-সম্রাট অশোক।
কিন্তু, ভারতে মৌর্য বংশের প্রতিষ্ঠাতা-চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য।
মৌর্য বংশের শেষ শাসক কে?
বৃহদ্রথ।
✔ ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম সাম্রাজ্য-মৌর্য সাম্রাজ্য।
✔ প্রতিষ্ঠাতা-চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য।
✔ শ্রেষ্ঠ শাসক- সম্রাট অশোক।
✔ শেষ শাসক-বৃহদ্রথ।
✔ রাজধানী ছিল পাটালিপুত্র।
পুন্ড্রবর্ধন/মহাস্থানগড়ে রাজধানী স্থাপন করেন কোন মৌর্য সম্রাট?
সম্রাট অশোক।
পুন্ড্রবর্ধন/মহাস্থানগড়ে রাজধানী স্থাপন করেন সম্রাট অশোক।
মৌর্য ও গুপ্ত যুগে বাংলার প্রাদেশিক রাজধানী ছিল কোনটি?
পুন্ড্রনগর।
মৌর্য ও গুপ্ত যুগে বাংলার প্রাদেশিক রাজধানী ছিল পুন্ড্রনগর।
মৌর্য ও গুপ্ত বংশের রাজধানী ছিল পাটালিপুত্র।
মৌর্য ও গুপ্ত যুগে বাংলার প্রাদেশিক রাজধানী ছিল কোনটি?
পুন্ড্রনগর।
মৌর্য ও গুপ্ত যুগে বাংলার প্রাদেশিক রাজধানী ছিল পুন্ড্রনগর।
মৌর্য ও গুপ্ত বংশের রাজধানী ছিল পাটালিপুত্র।
মৌর্য যুগের গুপ্তচরদের বলা হতো-
সঞ্চারা।
মৌর্য যুগের গুপ্তচরদের বলা হতো-সঞ্চারা।
প্রাচীন ভারতীয় স্বর্ণযুগ বলা হয় কোন বংশকে?
গুপ্ত বংশ।
প্রাচীন ভারতীয় স্বর্ণযুগ বলা হয় গুপ্ত বংশকে। গুপ্ত বংশের প্রতিষ্ঠাতা মহারাজা শ্রীগুপ্ত। রাজধানী ছিল পাটালিপুত্র।