বাংলাদেশের ইতহাস : সুলতানী আমল -৩ Flashcards
তাম্র মুদ্রা প্রচলন করেন কে?
মুহাম্মদ বিন তুঘলক।
তাম্র মুদ্রা প্রচলন করেন মুহাম্মদ বিন তুঘলক।
মুহাম্মদ বিন তুঘলক (১৩২৫-১৩৩৮) দিল্লির তুঘলক বংশের দ্বিতীয় সুলতান। তিনি ১৩২৫ থেকে ১৩৩৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত রাজত্ব করেন।
তিনি রাজধানী দিল্লী থেকে দেবগিরিতে স্থানান্তর করেন।
দিল্লি থেকে রাজধানী দেবগিরিতে স্থানান্তর করেন কে?
মুহম্মদ বিন তুগলক।
মুহম্মদ বিন তুগলক ছিলেন দিল্লির তুগলক বংশের দ্বিতীয় সুলতান।
তিনি দিল্লি থেকে রাজধানী দেবগিরিতে স্থানান্তর করেন। তিনি সোনা ও রুপার মুদ্রার পরিবর্তে ১৩৩৯ সালে ‘তাম্র মুদ্রা’ প্রচলন করেন।
অসাধারণ প্রতিভা ও অদম্য কর্মশক্তির অধিকারী মুহম্মদ বিন তুগলক জ্ঞানের বিভিন্ন শাখায়- যেমন দর্শন, ইতিহাস, চিকিৎসাবিদ্যা, হস্তাক্ষর, গণিত, জোতির্বিদ্যা এবং সকল প্রাকৃতিক বিজ্ঞানে গভীর জ্ঞান অর্জন করেন।
ভারতবর্ষে সর্বপ্রথম মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠা করেন-
মুহাম্মাদ ঘুরি।
মুহাম্মাদ ঘুরি ভারতবর্ষে সর্বপ্রথম মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠা করেন।
মুইজউদ্দিন মুহাম্মাদ জন্মনাম শিহাবউদ্দিন (মুহাম্মাদ ঘুরি বলেও পরিচিত) ছিলেন ঘুরি সাম্রাজ্যের সুলতান। তার ভাই গিয়াসউদ্দিন মুহাম্মাদের সাথে তিনি ১১৭৩ থেকে ১২০২ পর্যন্ত শাসন করেন।
মুইজউদ্দিন ঘুরি সাম্রাজ্যের অন্যতম মহান শাসক ছিলেন। দক্ষিণ এশিয়ায় মুসলিম শাসনের ভিত্তি তিনি স্থাপন করেছেন।
সিন্ধু বিজয়ের মাধ্যমে কে ভারতীয় উপমহাদেশে ইসলাম প্রতিষ্ঠার পথ সুগম করেন?
মুহম্মদ বিন কাসিম।
মুহম্মদ বিন কাসিম সিন্ধু বিজয়ের মাধ্যমে কে ভারতীয় উপমহাদেশে ইসলাম প্রতিষ্ঠার পথ সুগম করেন।
১১৯২ সালে তরাইনের দ্বিতীয় যুদ্ধে মুহম্মদ ঘুরী পৃথ্বীরাজ চৌহানকে পরাজিত করে ভারত উপমহাদেশে প্রথম মুসলিম শাসনের সূচনা করেন মুহম্মদ বিন কাসিম।
মুহাম্মদ বিন কাশিম ৭১২ সালে সিন্ধু জয়ের মাধ্যমে ভারতীয় উপমহাদেশে প্রথম ইসলামের শাসন প্রচলনের প্রচেষ্টা চালান। মুহাম্মদ বিন কাসিমের সিন্ধু জয়ের পর গজনির সুলতান মাহমুদ ১০০০-১০২৭ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত উপমহাদেশে ১৭ বার অভিযান পরিচালনা করেছিলেন।
দিল্লির সিংহাসনে আরোহণকারী প্রথম মুসলমান নারী সুলতানা রাজিয়া কার কন্যা ছিলেন?
ইলতুতমিশ।
দিল্লির সিংহাসনে আরোহণকারী প্রথম মুসলমান নারী সুলতানা রাজিয়া ছিলেন শামসুদ্দিন ইলতুতমিশের কন্যা।
ইলতুৎমিসের জীবদ্দশাতেই তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র নাসিরউদ্দিনের মৃত্যু হয়। তাঁর অন্যান্য পুত্ররা কেউই শাসনকার্যের উপযুক্ত ছিলেন না। এই কারণে তিনি তাঁর কন্যা রাজিয়া-কে তাঁর সিংহাসনের উত্তরাধিকারিণী মনোনীত করেন
সুলতানা রাজিয়া দিল্লির সিংহাসনে আরোহণকারী প্রথম মুসলমান/একমাত্র নারী।
তাঁর আমলেই সর্বপ্রথম রাজতন্ত্রের সঙ্গে তুর্কী অভিজাতদের ক্ষমতার লড়াই শুরু হয়। এই অভিজাতবর্গ ‘চল্লিশ চক্র’ বা ‘বন্দেগান্-ই-চাহেলাগান্’ বা ‘তার্কান-ই-চিহালগানী’ নামে পরিচিত ছিল।
এই ‘তার্কান-ই-চিহালগানী’ বা ‘চল্লিশ চক্র’ রাজিয়াকে সিংহাসনচ্যুত করতে ভূমিকা রাখে।
কোন মুসলমান প্রশাসক প্রথম দক্ষিণ ভারত জয় করেন?
আলাউদ্দিন খলজি।
আলাউদ্দিন খলজি প্রথম মুসলমান প্রশাসক হিসেবে দক্ষিণ ভারত জয় করেন।
আলাউদ্দিন খলজি ছিলেন দিল্লির শ্রেষ্ঠ সুলতান। ‘পদ্মিনী উপাখ্যান’ রচিত হয়- আলাউদ্দিনের সময়। তিনি দ্রব্যমূল্য ও বাজার নিয়ন্ত্রণ করেন।
ইবনে বতুতা আলাউদ্দিন খিলজকে দিল্লির শ্রেষ্ঠ সুলতান এবং ভারতের আলেকজান্ডার হিসেবে উল্লেখ করেছেন। দিল্লির সুলতানদের মধ্যে তিনিই প্রথম একটি স্থায়ী সেনাবাহিনী গড়ে তোলেন।
ভারতে প্রথম প্রতীক মুদ্রা প্রবর্তন করেন-
মুহম্মদ বিন তুগলক।
ভারতে প্রথম প্রতীক মুদ্রা প্রবর্তন করেন মুহম্মদ বিন তুগলক।
মুহম্মদ বিন তুগলক(১৩২৫-১৩৩৮) দিল্লির তুগলক বংশের দ্বিতীয় সুলতান।
তিনি দিল্লি থেকে রাজধানী দেবগিরিতে স্থানান্তর করেন। তিনি সোনা ও রুপার মুদ্রার পরিবর্তে ১৩৩৯ সালে ‘তাম্র মুদ্রা’ প্রচলন করেন।
দিল্লি সালতানাতের প্রতিষ্ঠাতা-
কুতুবউদ্দিন আইবেক।
দিল্লি সালতানাতের প্রতিষ্ঠাতা কুতুবউদ্দিন আইবেক।
তুর্কিস্তানের অধিবাসী কুতুবউদ্দিন আইবেক ছিলেন মুহম্মদ ঘুরির একজন কৃতদাস। তিনি ঘুরির অনুমতিক্রমে ভারত বিজয়ের পর দিল্লিতে স্থায়ী মুসলিম শাসনের গোড়াপত্তন করেন। দিল্লিতে অবস্থিত কুতুব মিনার নির্মাণ করেন। দানশীলতার জন্য লাখবক্স/লক্ষ দাতা হিসেবে পরিচিত। ঐতিহাসিক ড. শ্রীবাস্তবের মতে, তিনি ছিলেন সমর্থ হিন্দুস্তানের প্রথম সম্রাট
সুলতান-ই-আজম উপাধি কে লাভ করেছিল?
সুলতান শামসউদ্দিন ইলতুতমিশ।
সুলতান-ই-আজম উপাধি কে লাভ করেছিলেন সুলতান শামসউদ্দিন ইলতুতমিশ।
সুলতান শামসউদ্দিন ইলতুতমিশ ছিলেন কুতুবউদ্দিন আইবেকের জামাতা।
সুলতান শামসউদ্দিন ইলতুতমিশ হলেন দিল্লি সালতানাতের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা। তিনি মুসলমান শাসকদের মাঝে প্রথম মুদ্রা প্রচলন করেন।
প্রাচীন বাংলায় ‘স্বাধীন সুলতানী’ শাসনের প্রতিষ্ঠাতা কে?
ফখরুদ্দীন মুবারক শাহ।
প্রাচীন বাংলায় ‘স্বাধীন সুলতানী’ শাসনের প্রতিষ্ঠাতা ফখরুদ্দীন মুবারক শাহ।
বাংলায় স্বাধীন সুলতানি আমল প্রায় ২০০ বছর বিদ্যমান ছিলো। এই সময় দিল্লীর সুলতানগণ বাংলাকে তাঁদের শাসনের অধীন রাখতে পারেন নি।
ফখরুদ্দীন মুবারক শাহ বাংলায় প্রথম স্বাধীন মুসলিম সালতানাতের প্রতিষ্ঠাতা।
তাঁর রাজধানী ছিল ঐতিহাসিক নগর সোনারগাঁয়ে।
- ১৩৩৮ খ্রিস্টাব্দে বাহরাম খানের মৃত্যু হয়।
তাঁর মৃত্যুতে তাঁরই বর্ম-রক্ষক ফখরুদ্দীন সোনারগাঁও-এ ক্ষমতা দখল করে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং সুলতান ফখরুদ্দীন মুবারক শাহ উপাধি গ্রহণ করেন।
শ্রীকর নন্দী কোন সুলতানের আদেশে মহাভারত অনুবাদ করেন?
নুসরত শাহ।
শ্রীকর নন্দী কোন সুলতান নুসরত শাহের আদেশে মহাভারত অনুবাদ করেন।
নাসিরউদ্দিন নুসরত শাহ ছিলেন সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহের পুত্র। তাঁর সময়ে ভারতে মুঘল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়।
গৌড়ের বারদুয়ারি বা বড় সোনা মসজিদ তাঁর আমলের কীর্তি।
তিনি বাগেরহাটের মিঠাপুকুর এর নির্মাতা।
তাঁর আদেশে কবীন্দ্র পরমেশ্বর মহাভারতের কিয়দংশ বাংলায় অনুবাদ করেন।
- জ্ঞান ও শিক্ষা প্রসারের জন্য নুসরত শাহ দেশের বিভিন্ন স্থানে লাইব্রেরি স্থাপন করেন
নিজ নামে মুদ্রা জারি করেন কে?
ফখরুদ্দিন মোবারক শাহ।
নিজ নামে মুদ্রা জারি করেন ফখরুদ্দিন মোবারক শাহ।
ফখরুদ্দিন মোবারক শাহ ছিলেন বাংলার প্রথম স্বাধীন সুলতান।
১৩৩৮ সালে তিনি সোনারগাঁওয়ের শাসনক্ষমতা দখল ও স্বাধীনতা ঘোষনা করেন।
ফখরুদ্দিনের মৃত্যুর পর ক্ষমতায় বসেন তার পুত্র গাজী শাহ।
কৃত্তিবাস রামায়ন রচনা করেন কার পৃষ্ঠপোষকতায়?
জালালউদ্দিন মুহাম্মদ শাহ।
কৃত্তিবাস রামায়ন রচনা করেন জালালউদ্দিন মুহাম্মদ শাহের পৃষ্ঠপোষকতায়।
মহারাজ গণেশ ছিলেন বাংলার একজন হিন্দু শাসক। তিনি বাংলার ইলিয়াস শাহি রাজবংশকে ক্ষমতাচ্যুত করে ক্ষমতায় এসে সমগ্র বাঙ্গালা জুড়ে স্বাধীন হিন্দু সাম্রাজ্য স্থাপন করেন। তাঁর পুত্র ছিলেন সুলতান যদুনারায়ণ বা জালালউদ্দিন মুহাম্মদ শাহ।
জালালউদ্দিন মুহাম্মদ শাহ এর পৃষ্ঠপোষকতায় কৃত্তিবাস রামায়ন রচনা করেন।
হাবশী শাসন উচ্ছেদ করেন কোন সুলতান?
আলাউদ্দীন হুসেন শাহ।
হাবশী শাসন উচ্ছেদ করেন আলাউদ্দীন হুসেন শাহ।
বাংলায় ছয় বছর হাবশী শাসন জারি ছিল। হাবশী শাসন উচ্ছেদ করে সিংহাসনে বসেন সৈয়দ হোসেন। নাম ধারণ করেন আলাউদ্দীন হুসেন শাহ।
আলাউদ্দীন হুসেন শাহ ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ স্বাধীন সুলতান।
তার আমলে বাংলার রাজধানী ছিল গৌড়।
তাঁর সময় শ্রী চৈতন্য বৈষ্ণব ধর্ম প্রচার করেন।
তাঁর পৃষ্ঠপোষকতায় মালাধর বসু শ্রীমদ্ভাগবৎ ও কবীন্দ্র পরমেশ্বর মহাভারত বাংলায় অনুবাদ করেছিলেন।
বাংলার শেষ স্বাধীন মুসলমান শাসক কে?
গিয়াসউদ্দিন মাহমুদ শাহ।
বাংলার শেষ স্বাধীন মুসলমান শাসক ছিলেন গিয়াসউদ্দিন মাহমুদ শাহ।
গিয়াসউদ্দীন মাহমুদ শাহ (১৫৩৩-১৫৩৮) বাংলার হোসেন শাহী বংশের শেষ সুলতান। তিনি তাঁর ভ্রাতুষ্পুত্র সুলতান আলাউদ্দীন ফিরুজকে হত্যা করে ১৫৩৩ খ্রিস্টাব্দে সিংহাসনে আরোহণ করেন এবং পাঁচ বছর শাসন করেন।
ভ্রাতুষ্পুত্রকে ক্ষমতাচ্যুত করে গিয়াসউদ্দীন মাহমুদ শাহ অমাত্যদের মধ্যে নিজের শত্রু সৃষ্টি করেন এবং নিজ রাজ্যে অন্তর্বিরোধের বীজ বপন করেন। তাই সিংহাসনে আরোহণের পর তিনি খুব জটিল পরিস্থিতির সম্মুখীন হন।
বাংলার রাজধানী হিসেবে সােনারগাঁও এর পত্তন কে করেন?
ঈশা খা।
বাংলার রাজধানী হিসেবে সােনারগাঁও এর পত্তন করেন ঈশা খা।
ইসা খানের জন্ম ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে। তিনি ছিলেন সরাইলের জমিদার, ভাটি অঞ্চলের শাসক এবং বারো ভূঁইয়াদের নেতা।
তিনি ছিলেন বারো ভূঁইয়াদের নেতা। তিনি মুঘলদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা ঘোষণা করে, ‘মসনদ-ই-আলা’ উপাধি নেন।
শূর ও কররানি’ বাংলায় কোন আমলের শাসকগােষ্ঠীদের বংশ?
আফগান।
‘শূর ও কররানি’ বাংলায় আফগান আমলের শাসকগােষ্ঠীদের বংশ।
আফগান শাসন (১৫৩৮ ও ১৫৩৯-১৫৭৬ খ্রি.) হোসেন শাহী আমলের অবসানের পর বাংলায় প্রতিষ্ঠা লাভ করে।
শেরখান শূর (শের শাহ) ১৫৩৮ খ্রিস্টাব্দের এপ্রিল মাসে হোসেন শাহী বংশের শেষ সুলতান গিয়াসউদ্দীন মাহমুদ শাহকে পরাজিত করে বাংলা অধিকার করেন এবং সেখানে শূর বংশীয় আফগান শাসন প্রতিষ্ঠা করেন।
কররানি রাজবংশ সুলতান তাজ খান কররানি কর্তৃক ১৫৬৪ সালে স্থাপিত হয়।
উপমহাদেশের প্রামাণ্য দলিল ‘ইন্ডিকা’ গ্রন্থটি কার লেখা?
মেগাস্থিনিস।
উপমহাদেশের প্রামাণ্য দলিল ‘ইন্ডিকা’ গ্রন্থটি মেগাস্থিনিসের লেখা।
মেগাস্থিনিস ছিলেন একজন প্রাচীন গ্রীক ইতিহাসবিদ, কূটনীতিবিদ এবং হেলেনিস্টিক যুগে ভারতীয় নৃতত্ত্ববিদ ও অনুসন্ধানকারী। তিনি প্রাচীন গ্রিস এর একজন পর্যটক এবং ভূগোলবিদ। সিরিয়ার রাজা প্রথম সেলুকাসের দূত হিসেবে ভারতীয় রাজা চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য এর রাজদরবারে আসেন। তিনি যখন ভারতে আসেন তখন চন্দ্রগুপ্তের রাজদরবার ছিল ভারতের পাটালিপুত্র নামক স্থানে।