Chapter-7: Earth And Gravity Flashcards
মহাকর্ষ বল কী? ব্যাখ্যা কর ।
এ মহাবিশ্বের প্রতিটি বস্তুকণা পরস্পরকে যে বলে আকর্ষণ
করে তাকে মহাকর্ষ বল বলে। দুটি বস্তুকণার এ আকর্ষণ বলের মান
বস্তুকণাদ্বয়ের ভর এবং তাদের মধ্যবর্তী দূরত্বের উপর নির্ভর করে।
নিউটনের মহাকর্ষ সূত্রটি ব্যাখ্যা কর ।
মহাবিশ্বের প্রতিটি বস্তুকণা একে অপরকে নিজের দিকে আকর্ষণ করে । এই আকর্ষণ বলের মান বস্তুকণাদ্বয়ের ভরের গুণফলের সমানুপাতিক এবং তাদের মধ্যবর্তী দূরত্বের বর্গের ব্যাস্তানুপাতিক এবং এ বল বস্তুকণাদ্বয়ের সংযোজক সরলরেখা বরাবর ক্রিয়া করে। মহাকর্ষ সূত্রানুসারে,
F1 = F2 = F ∞ m1m2/d²
F= G(m1m2/d²)
[এখানে G একটি সমানুপাতিক ধ্রুবক]
মহাকর্ষ বল কোন কোন বিষয়ের উপর নির্ভর করে?
মহাকর্ষ বল যে যে বিষয়ের উপর নির্ভর করে—
১. বস্তুকণার ভরের উপর
২. বস্তুকণার মধ্যবর্তী দূরত্বের উপর
মহাকর্ষীয় ধ্রুবককে কেন সর্বজনীন বলা হয়?
মহাকর্ষীয় ধ্রুবকের মান মহাবিশ্বের সকল স্থানে একই। তাই মহাকর্ষীয় ধ্রুবককে সর্বজনীন বলা হয়।
দুটি বস্তুর মধ্যবর্তী দূরত্ব 3 গুণ করলে মহাকর্ষ বল কত হবে?
আমরা জানি, F∞1/d²
যদি দুটি বস্তুর মধ্যবর্তী দূরত্ব 3 গুণ করলে মহাকর্ষ বল 1/9 হবে।
দুটি বস্তুর ভর বৃদ্ধি পেলে মহাকর্ষ বল বৃদ্ধি পায় কেন?
মহাবিশ্বের যেকোনো দুটি বস্তুর মধ্যকার আকর্ষন বল হচ্ছে মহাকর্ষ বল। নিউটনের সূত্রানুসারে মহাকর্ষ বল ভরের গুণফলের সমানুপাতিক। ভর বৃদ্ধি পেলে বলও বৃদ্ধি পাবে। তাই দুটি বস্তুর ভর বৃদ্ধি পেলে মহাকর্ষ বল বৃদ্ধি পায়।
অভিকর্ষ বল কী? বুঝিয়ে লেখ।
এ মহাবিশ্বের প্রতিটি বস্তুকণা একে অপরকে আকর্ষণ করে। এ
বলকে বলা হয় মহাকর্ষ বল। এ মহাবিশ্বের দুটি বস্তুর মধ্যে যদি
একটি পৃথিবী হয়, তবে পৃথিবী বস্তুটিকে যে বলে আকর্ষণ করে তাকে
অভিকর্ষ বল বলে । পৃথিবী ও চাঁদের মধ্যে আকর্ষণ বল হলো অভিকর্ষ
বল ।
একটি ক্রিকেট বলকে উপরে নিক্ষেপ করলে আবার ফিরে
আসে কেন?
একটি ক্রিকেট বলকে উপরে নিক্ষেপ করলে তা আবার ভূপৃষ্ঠে ফিরে আসে। কারণ পৃথিবী ক্রিকেট বলকে অভিকর্ষ বলে আকর্ষণ করে। যার জন্য বলটি ভূপৃষ্ঠে ফিরে আসে।
অভিকর্ষজ ত্বরণ বলতে কী বুঝায়?
অভিকর্ষ বলের প্রভাবে কোনো স্থানে মুক্তভাবে পড়ন্ত কোনো বস্তুর বেগ বৃদ্ধির হারকে অভিকর্ষজ ত্বরণ বলে ।
অভিকর্ষজ ত্বরণ কেন বস্তু নিরপেক্ষ?
আমরা জানি, g = GM/d²
অভিকর্ষজ ত্বরণ বা g বস্তুর ভরের উপর নির্ভর করে না। তাই এটি
বস্তু নিরপেক্ষ ।
পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে g এর মান বিভিন্ন কেন?
অভিকর্ষজ ত্বরণ g এর মান পৃথিবীর কেন্দ্র হতে বস্তুর দূরত্ব d এর উপর নির্ভর করে । পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে d এর মান বিভিন্ন রকম হয় । তাই পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে g এর মানও বিভিন্ন হয় ।
পৃথিবীর মেরু অঞ্চলে g এর মান অধিক কেন?
অভিকর্ষজ ত্বরণ, g এর মান পৃথিবীর ব্যাসার্ধ, R এর উপর নির্ভর করে। পৃথিবী সম্পূর্ণ গোলাকার নয়, মেরু অঞ্চলে একটুখানি চাপা। মেরু অঞ্চলে পৃথিবীর কেন্দ্র হতে R এর দূরত্ব সবচেয়ে কম বলে এখানে অভিকর্ষজ ত্বরণের মান অধিক হয়।
মেরু অঞ্চল হতে বিষুবীয় অঞ্চলে গেলে অভিকর্ষজ ত্বরণের মান কমে কেন?
মেরু অঞ্চলে ব্যাসার্ধ সবচেয়ে কম হয়। কিন্তু মেরু হতে বিষুবীয় অঞ্চলের দিকে গেলে ব্যাসার্ধ বেড়ে যায়। অভিকর্ষজ ত্বরণ পথিবীর ব্যাসার্ধের উপর নির্ভর করে। তাই মেরু অঞ্চল হতে বিষুবীয় অঞ্চলে গেলে অভিকর্ষজ ত্বরণের মানও কমে যায় ।
ভর সম্পর্কে ধারণা দাও।
প্রত্যেক বস্তু পদার্থ দ্বারা গঠিত। ভর হলো কোনো বস্তুতে পদার্থের পরিমাণ। বস্তুর ভর এর অবস্থান, আকৃতি বা গতি
পরিবর্তনের জন্য পরিবর্তিত হয় না। যে পরমাণু বা অণু দ্বারা বস্তুটি গঠিত তার সংখ্যা ও সংযুক্তির উপর বস্তুর ভর নির্ভর করে। ভরের আন্তর্জাতিক একক হলো কিলোগ্রাম বা কেজি (kg)।
ওজন কী? ব্যাখ্যা কর।
কোন বস্তুকে পৃথিবী যে বলে আকর্ষণ করে তাকে ঐ ওজন বলে। কোনো বস্তুর উপর শুধু অভিকর্ষজ বল কাজ করলে এবং পৃথিবীর কোনো স্থানে অভিকর্ষজ ত্বরণ g ও বস্তুর ভর m হলে, ঐ স্থানে বস্তুটির ওজন, W = mg হবে।
পৃথিবী পৃষ্ঠে একজন মানুষের ভর 60 kg হলে ঐ ব্যক্তির ওজন কত হবে?
আমরা জানি,
W = mg = 60 x 9.8 = 588 N
ঐ ব্যক্তির ওজন হবে 588 N।
ভর ও ওজনের দুইটি পার্থক্য লেখ।
ভর ও ওজনের দুইটি পার্থক্য নিচে উল্লেখ করা হলো-
ভর
১. ভর হলো কোনো বস্তুতে
পদার্থের পরিমাণ।
২. ভর বস্তুর স্থান পরিবর্তনে পরিবর্তিত হয় না।
ওজন
১. কোনো বস্তুকে পৃথিবী যে বলে
আকর্ষণ করে তাকে ঐ বস্তুর
ওজন বলে।
২. ওজন অভিকর্ষজ ত্বরণের উপর নির্ভর করে বিধায় স্থান পরিবর্তনে এটি পরিবর্তিত হয়।
চাঁদে বস্তুর ভর অপরিবর্তিত থাকে কেন?
বস্তুর মধ্যে পদার্থের পরিমাণই হচ্ছে ভর। ভর ধ্রুব রাশি যা ভূপৃষ্ঠে বা ভূপৃষ্ঠের উপরে বস্তুর অবস্থান পরিবর্তনের সাথে পরিবর্তিত হয় না। তাই চাঁদে বস্তুর ভর অপরিবর্তিত থাকে।
ওজন বস্তুর মৌলিক ধর্ম নয় কেন?
বস্তুর যে ধর্ম সর্বদা অপরিবর্তিত থাকে তাকে মৌলিক ধর্ম বলে । যেমন ভর বস্তুর মৌলিক ধর্ম। ওজন বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন হয়। সব সময় পরিবর্তনশীল। তাই ওজন বস্তুর মৌলিক ধর্ম নয় ।
পাহাড়ে উঠলে বস্তুর ওজন কমে যায় কেন?
বস্তুর ওজন অভিকর্ষজ ত্বরণ g এর উপর নির্ভর করে। যেসব কারণে g এর পরিবর্তন হয় সেসব কারণে বস্তুর ওজনও পরিবর্তন হয়। পাহাড়ে উঠলে পৃথিবীর কেন্দ্র হতে বস্তুর মধ্যবর্তী দূরত্ব d বৃদ্ধি পায় ফলে g এর মান কমে। তাই পাহাড়ে উঠলে বস্তুর ওজন কমে যায়।
পৃথিবীর কেন্দ্রে বস্তুর ওজন শূন্য হয় কেন ?
বস্তুর ওজন অভিকর্ষজ ত্বরণের উপর নির্ভর করে। অভিকর্ষজ ত্বরণ পৃথিবীর ব্যাসার্ধের উপর নির্ভর করে। পৃথিবীর কেন্দ্রে ব্যাসার্ধ শূন্য। তাই অভিকর্ষজ ত্বরণও শূন্য হয়। এ কারণে পৃথিবীর কেন্দ্রে বস্তুর ওজন শূন্য হয় ।
W = 9.8 N বলতে কী বুঝায়?
W = 9.8N বলতে বুঝায় পৃথিবী একটি বস্তুকে তার কেন্দ্রের দিকে 9.8N বলে আকর্ষণ করে।
বস্তুর ওজন পরিবর্তনের কারণগুলো কী কী?
বস্তুর ওজন পরিবর্তনের কারণগুলো নিম্নরূপ—
১. পৃথিবীর আকৃতির জন্য
২. পৃথিবীর আহ্নিক গতির জন্য
৩. মেরু থেকে কৌণিক দূরত্বের জন্য
৪. ভূপৃষ্ঠ হতে উচ্চতর কোনো স্থানে
৫. পৃথিবীর অভ্যন্তরে কোনো স্থানে ।
খনিতে বস্তুর ওজন কম হয় কেন?
ভূপৃষ্ঠ থেকে যত নিচে যাওয়া যায় অভিকর্ষজ ত্বরণের মান ততই কমতে থাকে। এর ফলে পৃথিবীর যত অভ্যন্তরে যাওয়া যায় বস্তুর ওজনও তত কমতে থাকে। এ কারণে খনিতে কোনো বস্তুর
ওজন কম হয় ।