তাপ Flashcards
তাপ কাকে বলে
তাপ হলো এক প্রকার শক্তি যা কোনো বস্তু কতটা গরম বা ঠান্ডা তা নির্ধারণ করে। যখন কোনো বস্তুকে উত্তপ্ত করা হয়, তখন তার অণুগুলোর মধ্যেকার কম্পন বেড়ে যায়, যার ফলে ঐ বস্তুর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। আবার যখন কোনো বস্তু ঠান্ডা হয়, তখন তার অণুগুলোর কম্পন কমে যায় এবং তাপমাত্রা হ্রাস পায়।
সহজভাবে বললে, তাপ হলো সেই শক্তি যা এক বস্তু থেকে অন্য বস্তুতে স্থানান্তরিত হতে পারে শুধুমাত্র তাদের তাপমাত্রার পার্থক্যের কারণে। এটি উচ্চ তাপমাত্রা থেকে নিম্ন তাপমাত্রার দিকে প্রবাহিত হয়।
তোমার পরীক্ষার জন্য এই সংজ্ঞাটি যথেষ্ট ভালো হবে।
উষ্ণতা কাকে বলে
উষ্ণতা হলো কোনো বস্তুর তাপীয় অবস্থা, যা নির্ধারণ করে ঐ বস্তুটি কতটা গরম বা ঠান্ডা। অন্যভাবে বললে, উষ্ণতা হলো বস্তুর অণুগুলোর গড় গতিশক্তির একটি পরিমাপ। যখন কোনো বস্তুর অণুগুলো দ্রুত গতিতে কম্পিত হয়, তখন তার উষ্ণতা বেশি থাকে এবং আমরা সেটাকে গরম অনুভব করি। আর যখন অণুগুলোর কম্পন ধীর হয়, তখন উষ্ণতা কম থাকে এবং আমরা সেটাকে ঠান্ডা অনুভব করি।
পরীক্ষার জন্য এই সংজ্ঞাটি লিখতে পারো।
বস্তুর উষ্ণতা বাড়াতে প্রয়োজনীয় তাপ কোন কোন বিষয়ের উপর নির্ভর করে
বস্তুর উষ্ণতা বাড়াতে প্রয়োজনীয় তাপ বেশ কয়েকটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে। সেগুলো হলো:
১. বস্তুর ভর: কোনো বস্তুর ভর যত বেশি হবে, তার উষ্ণতা একই পরিমাণে বাড়াতে তত বেশি তাপের প্রয়োজন হবে। কারণ বেশি ভরের বস্তুতে বেশি সংখ্যক অণু থাকে এবং তাদের প্রত্যেকটির গতিশক্তি বাড়াতে বেশি শক্তি সরবরাহ করতে হয়।
২. বস্তুর উপাদান: বিভিন্ন পদার্থের উষ্ণতা একই পরিমাণে বাড়াতে বিভিন্ন পরিমাণের তাপের প্রয়োজন হয়। এর কারণ হলো প্রতিটি পদার্থের নিজস্ব “আপেক্ষিক তাপ” (Specific Heat Capacity) রয়েছে। আপেক্ষিক তাপ হলো এক কেজি ভরের কোনো পদার্থের তাপমাত্রা এক ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি করতে প্রয়োজনীয় তাপের পরিমাণ। যে পদার্থের আপেক্ষিক তাপ যত বেশি, তার উষ্ণতা বাড়াতে তত বেশি তাপ লাগবে। উদাহরণস্বরূপ, লোহার চেয়ে পানির আপেক্ষিক তাপ অনেক বেশি, তাই একই ভরের পানির তাপমাত্রা একই পরিমাণে বাড়াতে লোহার চেয়ে বেশি তাপ দিতে হবে।
৩. প্রয়োজনীয় উষ্ণতার পরিবর্তন: আপনি বস্তুর উষ্ণতা কতটা বাড়াতে চান তার উপরও প্রয়োজনীয় তাপ নির্ভর করে। যদি আপনি বেশি উষ্ণতা বৃদ্ধি করতে চান, তবে আপনাকে বেশি তাপ সরবরাহ করতে হবে। উষ্ণতার পরিবর্তন যত বেশি হবে, প্রয়োজনীয় তাপের পরিমাণও তত বেশি হবে।
৪. বস্তুর প্রাথমিক তাপমাত্রা: যদিও এটি সরাসরি প্রয়োজনীয় তাপের পরিমাণকে নির্ধারণ করে না, তবে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ, একটি নির্দিষ্ট চূড়ান্ত তাপমাত্রায় পৌঁছাতে, বস্তুর প্রাথমিক তাপমাত্রা যত কম হবে, তত বেশি তাপ সরবরাহ করতে হবে।
সুতরাং, কোনো বস্তুর উষ্ণতা বাড়াতে প্রয়োজনীয় তাপ মূলত ঐ বস্তুর ভর, উপাদানের আপেক্ষিক তাপ এবং আপনি কতটা উষ্ণতা বৃদ্ধি করতে চান তার উপর নির্ভর করে।
1ক্যালোরি কাকে বলে
এক ক্যালোরি হলো তাপের একটি একক। সহজভাবে বলতে গেলে, এক গ্রাম বিশুদ্ধ জলের তাপমাত্রা এক ডিগ্রি সেলসিয়াস (1°C) বৃদ্ধি করার জন্য যে পরিমাণ তাপশক্তির প্রয়োজন হয়, তাকে এক ক্যালোরি বলে।
মনে করো, তোমার কাছে এক চামচ জল আছে। এই জলের তাপমাত্রা যদি এখন ২০°C থাকে, আর তুমি যদি তাপ দিয়ে সেই জলের তাপমাত্রা ২১°C করতে চাও, তাহলে তোমাকে ঠিক যতটা তাপ দিতে হবে, সেটাই হলো এক ক্যালোরি।
ক্যালোরি সাধারণত শক্তি বা তাপের পরিমাণ বোঝাতে ব্যবহার করা হয়। যদিও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে এখন শক্তির একক হিসেবে জুল (Joule) বেশি ব্যবহার করা হয়, তবুও ক্যালোরির ব্যবহার এখনও কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায়, বিশেষ করে খাদ্য ও পুষ্টির ক্ষেত্রে।
মনে রাখবে, ১ ক্যালোরি প্রায় ৪.১৮৪ জুলের সমান।
1জুল কাকে বলে (তাপের SI একক)
জুল হল তাপের SI একক। কোনো বস্তুর তাপমাত্রা 1 কেলভিন বৃদ্ধি করার জন্য যে পরিমাণ তাপের প্রয়োজন হয়, তাকে 1 জুল বলে।
সহজ ভাষায় বললে, 1 কিলোগ্রাম ভরের কোনো বস্তুকে গরম করে তার তাপমাত্রা 1 ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়াতে যে পরিমাণ তাপ লাগে, সেটাই হল 1 জুল।
আপেক্ষিক তাপ কাকে বলে
আপেক্ষিক তাপ হল কোনো একক ভরের (যেমন 1 কেজি) কোনো পদার্থের তাপমাত্রা 1 কেলভিন (বা 1 ডিগ্রি সেলসিয়াস) বৃদ্ধি করার জন্য প্রয়োজনীয় তাপের পরিমাণ।
সহজভাবে বললে, কোনো পদার্থের 1 কেজি ভরের একটি টুকরোর তাপমাত্রা একটুখানি বাড়াতে (ঠিক 1 ডিগ্রি সেলসিয়াস) যতটা তাপ লাগে, সেই তাপের পরিমাণকেই ওই পদার্থের আপেক্ষিক তাপ বলে।
বিভিন্ন পদার্থের আপেক্ষিক তাপ বিভিন্ন হয়। যেমন, জলের আপেক্ষিক তাপ বালির চেয়ে অনেক বেশি। এর মানে হল, একই পরিমাণ জলের তাপমাত্রা 1 ডিগ্রি বাড়াতে বালির চেয়ে অনেক বেশি তাপের প্রয়োজন হয়।
আপেক্ষিক তাপের একক হল জুল প্রতি কিলোগ্রাম প্রতি কেলভিন (J/kg·K)।
গলনাঙ্ক কাকে বলে
গলনাঙ্ক হল সেই নির্দিষ্ট তাপমাত্রা, যেখানে কোনো কঠিন পদার্থ তাপ প্রয়োগের ফলে তরলে পরিণত হতে শুরু করে। এই তাপমাত্রায় কঠিন এবং তরল উভয় অবস্থাই একসঙ্গে থাকতে পারে।
সহজভাবে বললে, বরফ যখন ধীরে ধীরে গরম হয়ে জলে পরিণত হয়, তখন যে তাপমাত্রায় বরফ পুরোপুরি গলে জল হতে শুরু করে, সেটাই হল বরফের গলনাঙ্ক। বিশুদ্ধ বরফের গলনাঙ্ক হল 0 ডিগ্রি সেলসিয়াস (0°C)।
মনে রাখবে, গলনাঙ্কের সময় তাপমাত্রা স্থির থাকে। যতক্ষণ না কঠিন পদার্থটি সম্পূর্ণভাবে তরলে পরিণত হয়, ততক্ষণ তাপমাত্রা বাড়ে না। কঠিন পদার্থটি তরলে পরিণত হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় তাপকে লীন তাপ বা গলনের লীন তাপ বলা হয়।
কঠিনীভবন কাকে বলে
কঠিনীভবন হল সেই প্রক্রিয়া, যেখানে কোনো তরল পদার্থ তাপ হারানোর ফলে কঠিন পদার্থে পরিণত হয়।
সহজভাবে বললে, যখন কোনো তরল ঠান্ডা হতে শুরু করে এবং একটা নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় এসে পুরোটা জমে গিয়ে কঠিন হয়ে যায়, তখন সেই প্রক্রিয়াটিকে কঠিনীভবন বলে।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, জল যখন ঠান্ডা হতে হতে 0 ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছায়, তখন তা জমে বরফ হয়ে যায়। এখানে জল তরল অবস্থা থেকে কঠিন অবস্থায় পরিবর্তিত হলো, এটাই কঠিনীভবন।
কঠিনীভবনের সময় তরল পদার্থটি তাপ বর্জন করে এবং এর তাপমাত্রা স্থির থাকে যতক্ষণ না পুরো তরল কঠিন হয়। কঠিন হওয়ার জন্য তরল যে তাপ বর্জন করে, তাকে কঠিনীভবনের লীন তাপ বলে।
হিমাঙ্ক কাকে বলে
হিমাঙ্ক হল সেই নির্দিষ্ট তাপমাত্রা, যেখানে কোনো তরল পদার্থ তাপ হারানোর ফলে কঠিন পদার্থে পরিণত হতে শুরু করে। এই তাপমাত্রায় তরল এবং কঠিন উভয় অবস্থাই একসঙ্গে থাকতে পারে।
সহজভাবে বললে, জল যখন ধীরে ধীরে ঠান্ডা হতে শুরু করে এবং যে তাপমাত্রায় এসে পুরোপুরি বরফে পরিণত হয়, সেই তাপমাত্রাটিই হল জলের হিমাঙ্ক। বিশুদ্ধ জলের হিমাঙ্ক হল 0 ডিগ্রি সেলসিয়াস (0°C)।
মনে রাখবে, হিমাঙ্কের সময় তাপমাত্রা স্থির থাকে। যতক্ষণ না তরল পদার্থটি সম্পূর্ণভাবে কঠিন না হয়, ততক্ষণ তাপমাত্রা কমে না। তরল পদার্থটি কঠিন হওয়ার জন্য যে তাপ বর্জন করে, তাকে কঠিনীভবনের লীন তাপ বলা হয়।
তাহলে, গলনাঙ্ক আর হিমাঙ্ক আসলে একই তাপমাত্রা - শুধু বিপরীত প্রক্রিয়া। গলনাঙ্কে কঠিন পদার্থ গলে তরল হয়, আর হিমাঙ্কে তরল পদার্থ জমে কঠিন হয়। বিশুদ্ধ পদার্থের ক্ষেত্রে গলনাঙ্ক এবং হিমাঙ্ক একই থাকে।
লীনতাপ কাকে বলে
লীনতাপ হল সেই তাপশক্তি যা কোনো পদার্থের অবস্থার পরিবর্তন ঘটানোর জন্য প্রয়োজন হয়, কিন্তু এই সময় পদার্থের তাপমাত্রার কোনো পরিবর্তন হয় না।
সহজভাবে বললে, যখন কোনো কঠিন পদার্থ গলে তরল হয় অথবা কোনো তরল পদার্থ বাষ্পে পরিণত হয়, তখন বাইরে থেকে তাপ দেওয়া সত্ত্বেও ঐ পদার্থের তাপমাত্রা একই থাকে। এই যে অতিরিক্ত তাপ শক্তি সরবরাহ করা হয়, যা শুধু অবস্থার পরিবর্তনে কাজে লাগে, তাকেই লীনতাপ বলে।
লীনতাপ দুই প্রকার হতে পারে:
১. গলনের লীনতাপ: কঠিন পদার্থকে তরলে পরিণত করার জন্য প্রয়োজনীয় তাপ (যেমন বরফ গলিয়ে জল করার সময়)। এই সময় বরফ এবং জল উভয়ের তাপমাত্রাই 0°C থাকে যতক্ষণ না পুরো বরফ গলে যায়।
২. বাষ্পীভবনের লীনতাপ: তরল পদার্থকে গ্যাসে পরিণত করার জন্য প্রয়োজনীয় তাপ (যেমন জল ফুটিয়ে ভাপ করার সময়)। এই সময় জল এবং জলীয় বাষ্প উভয়ের তাপমাত্রাই 100°C থাকে যতক্ষণ না পুরো জল বাষ্পে পরিণত হয়।
লীনতাপ পদার্থের অণুগুলোর মধ্যেকার বন্ধন ভাঙতে বা নতুন বন্ধন তৈরি করতে সাহায্য করে, তাই অবস্থার পরিবর্তনের সময় তাপমাত্রার পরিবর্তন ঘটে না।
হিমমিশ্র কাকে বলে
হিমমিশ্র হল বরফ এবং লবণের মিশ্রণ। এই মিশ্রণটি সাধারণ বরফের চেয়েও অনেক কম তাপমাত্রায় পৌঁছাতে পারে।
তুমি হয়তো দেখেছ, যারা আইসক্রিম বিক্রি করেন, তারা একটি পাত্রে বরফ এবং লবণ মেশান। এর কারণ হল, লবণের সাথে বরফ মেশালে বরফের গলনাঙ্ক কমে যায়। ফলে, বরফ খুব সহজে গলে যায় এবং পারিপার্শ্বিক পরিবেশ থেকে তাপ শোষণ করে। এই তাপ শোষণের কারণে মিশ্রণটি খুব ঠান্ডা হয়ে যায় এবং আইসক্রিমকে জমাট রাখতে সাহায্য করে।
তাহলে, সহজ কথায়, হিমমিশ্র হল বরফ আর লবণের ঠান্ডা মিশ্রণ, যা কোনো জিনিসকে খুব দ্রুত ঠান্ডা করতে ব্যবহার করা হয়।
পদার্থের গলনাঙ্ক কোন কোন বিষয়ের উপর নির্ভর করে
পদার্থের গলনাঙ্ক মূলত কয়েকটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে:
১. পদার্থের প্রকৃতি: বিভিন্ন পদার্থের অণুগুলোর মধ্যে আকর্ষণ বল ভিন্ন ভিন্ন হয়। যে পদার্থের অণুগুলোর মধ্যে আকর্ষণ বল যত বেশি, সেটির গলনাঙ্ক তত বেশি হবে। উদাহরণস্বরূপ, লোহার গলনাঙ্ক বরফের চেয়ে অনেক বেশি।
২. চাপ: সাধারণত, পদার্থের উপর চাপ বাড়লে তার গলনাঙ্কও বাড়ে। তবে কিছু ব্যতিক্রমও আছে, যেমন বরফ। বরফের ক্ষেত্রে চাপ বাড়লে গলনাঙ্ক কমে যায়।
৩. বিশুদ্ধতা: বিশুদ্ধ পদার্থের একটি নির্দিষ্ট গলনাঙ্ক থাকে। কিন্তু যদি পদার্থের সাথে অন্য কোনো ভেজাল মেশানো থাকে, তবে তার গলনাঙ্ক পরিবর্তিত হতে পারে। সাধারণত, ভেজাল মেশালে গলনাঙ্ক কমে যায়।
৪. পারিপার্শ্বিক অবস্থা: যদিও এটি সরাসরি গলনাঙ্কের উপর প্রভাব ফেলে না, তবে পারিপার্শ্বিক তাপমাত্রা গলন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় তাপ সরবরাহে ভূমিকা রাখে।
তাহলে, একটি পদার্থের গলনাঙ্ক মূলত তার নিজস্ব বৈশিষ্ট্য, পারিপার্শ্বিক চাপ এবং তার বিশুদ্ধতার উপর নির্ভর করে।
বরফ গলনের লীনতাপ 80ক্যালোরি/গ্ৰাম বলতে কি বোঝায়
বরফ গলনের লীনতাপ 80 ক্যালোরি/গ্রাম বলতে বোঝায় যে 1 গ্রাম বরফকে তার গলনাঙ্কে (0°C) রেখে সম্পূর্ণরূপে তরলে (0°C জলে) পরিণত করতে 80 ক্যালোরি তাপশক্তির প্রয়োজন হয়। এই সময় বরফের তাপমাত্রা বাড়ে না, শুধুমাত্র অবস্থার পরিবর্তন ঘটে কঠিন থেকে তরলে।
সহজ ভাষায়, বরফের এক টুকরোকে জল হতে হলে, তার তাপমাত্রা না বাড়িয়ে প্রতি গ্রাম বরফের জন্য 80 ক্যালোরি তাপ দিতে হয়। এই তাপ বরফের ভেতরের বন্ধন ভেঙে তাকে তরলে পরিণত করে।
বাষ্পীভবন কাকে বলে
বাষ্পীভবন হলো একটি ভৌত প্রক্রিয়া, যেখানে কোনো তরল পদার্থ তাপ শক্তি গ্রহণ করে ধীরে ধীরে গ্যাসীয় বা বাষ্পীয় অবস্থায় পরিবর্তিত হয়। এই প্রক্রিয়াটি তরলের পৃষ্ঠতলে ঘটে থাকে।
সহজভাবে বললে, যখন কোনো তরল গরম হয়, তখন তার কিছু অণু যথেষ্ট শক্তি লাভ করে এবং তরলের আকর্ষণ কাটিয়ে উঠে বাতাসে মিশে যায়। এই ধীরে ধীরে তরল থেকে গ্যাসে পরিণত হওয়ার ঘটনাকেই বাষ্পীভবন বলে।
উদাহরণস্বরূপ, ভেজা কাপড় রোদে শুকাতে দিলে বাষ্পীভবনের মাধ্যমেই কাপড়ের জল ধীরে ধীরে বাতাসে মিশে যায় এবং কাপড় শুকিয়ে যায়। পুকুর বা নদীর জল সূর্যের তাপে ধীরে ধীরে কমে যাওয়াও বাষ্পীভবনের কারণে হয়।
বাষ্পায়ন কাকে বলে ও তার বৈশিষ্ট্য ও কোন কোন বিষয়ের উপর নির্ভর করে
বাষ্পায়ন হলো একটি প্রক্রিয়া যেখানে কোনো তরল ধীরে ধীরে গ্যাস বা বাষ্পে পরিণত হয়। এটি কেবল তরলের উপরিভাগে ঘটে থাকে।()/(/(())()))())(0)
বাষ্পায়নের কিছু বৈশিষ্ট্য:
* ধীরে ধীরে ঘটে: বাষ্পায়ন একটি ধীর প্রক্রিয়া। তরলের সব অংশ একসাথে বাষ্পে পরিণত হয় না, কেবল ওপরের স্তর থেকে ধীরে ধীরে অণুগুলো গ্যাসীয় অবস্থায় চলে যায়।
* পৃষ্ঠের ঘটনা: এটি কেবল তরলের উন্মুক্ত পৃষ্ঠে ঘটে। ভেতরের অণুগুলো সহজে বাইরে আসতে পারে না।
* সব তাপমাত্রায় সম্ভব: বাষ্পায়ন যেকোনো তাপমাত্রায় হতে পারে, তবে তাপমাত্রা বাড়লে বাষ্পায়নের হারও বাড়ে।
* শীতলতা সৃষ্টি করে: যখন তরলের অণুগুলো বাষ্পীভূত হয়, তখন তারা তরলের কাছ থেকে তাপ গ্রহণ করে। ফলে তরল এবং তার आसपासের পরিবেশ ঠান্ডা হয়ে যায়। উদাহরণস্বরূপ, ঘাম শুকিয়ে গেলে আমরা ঠান্ডা অনুভব করি কারণ ঘাম বাষ্পীভূত হওয়ার সময় আমাদের শরীর থেকে তাপ নেয়।
* কিছু বিষয়ের উপর নির্ভরশীল: বাষ্পায়নের হার কিছু বিষয়ের উপর নির্ভর করে, যেমন:
* বায়ুপ্রবাহ: বাতাসের গতি বেশি থাকলে বাষ্প দ্রুত সরে যায় এবং আরও বাষ্পায়ন হতে পারে।
* তরলের উপরিভাগের ক্ষেত্রফল: তরলের উপরিভাগ যত বড় হবে, তত বেশি অণু বাষ্পীভূত হতে পারবে।
* আর্দ্রতা: বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকলে বাষ্পায়নের হার কমে যায়। বাতাস শুষ্ক হলে বাষ্পায়ন দ্রুত হয়।
* তরলের প্রকৃতি: বিভিন্ন তরলের বাষ্পায়নের হার আলাদা হয়। কিছু তরল দ্রুত বাষ্পীভূত হয় (যেমন স্পিরিট), আবার কিছু তরল ধীরে ধীরে বাষ্পীভূত হয় (যেমন তেল)।
* তাপমাত্রা: তাপমাত্রা বাড়লে তরলের অণুগুলোর গতিশক্তি বাড়ে এবং তারা সহজে বাষ্পে পরিণত হতে পারে।
আশা করি তুমি বাষ্পায়ন এবং এর বৈশিষ্ট্যগুলো বুঝতে পেরেছ। )/)/))/)))))
বাষ্পায়ন হলো একটি প্রক্রিয়া যেখানে তরল পদার্থ ধীরে ধীরে গ্যাস বা বাষ্পে পরিণত হয়। এটা সাধারণত তরলের উপরিভাগে ঘটে থাকে। যখন তরলের অণুগুলো যথেষ্ট শক্তি অর্জন করে, তখন তারা তরলের আকর্ষণ কাটিয়ে উঠে বায়ুতে মিশে যায়।
বাষ্পায়ন বিভিন্ন বিষয়ের উপর নির্ভর করে, যেমন:
* তাপমাত্রা: তাপমাত্রা যত বেশি হবে, বাষ্পায়নের হার তত বাড়বে। কারণ বেশি তাপমাত্রায় তরলের অণুগুলোর শক্তি বেশি থাকে এবং তারা সহজে বাষ্পে পরিণত হতে পারে।
* আর্দ্রতা: বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ যত কম হবে, বাষ্পায়নের হার তত বেশি হবে। শুষ্ক বাতাস তরলের বাষ্পকে দ্রুত সরিয়ে নিতে পারে।
* বায়ুপ্রবাহ: বাতাসের চলাচল যত বেশি হবে, বাষ্পায়নের হার তত বাড়বে। বাতাস তরলের উপরিভাগ থেকে বাষ্পকে সরিয়ে নেয়, ফলে আরও তরল বাষ্পে পরিণত হওয়ার সুযোগ পায়।
* পৃষ্ঠের ক্ষেত্রফল: তরলের উপরিভাগের ক্ষেত্রফল যত বেশি হবে, বাষ্পায়নের হার তত বেশি হবে। কারণ বেশি সংখ্যক অণু বায়ুর সংস্পর্শে আসতে পারে।
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বাষ্পায়নের অনেক উদাহরণ দেখা যায়। যেমন, ভেজা কাপড় রোদে শুকালে জল বাষ্প হয়ে উড়ে যায়, পুকুর বা নদীর জল ধীরে ধীরে কমে যায়, এবং ঘাম শুকিয়ে গেলে আমাদের শরীর ঠান্ডা লাগে।
গরমকালে ঘামে ভেজা শরীরে হাওয়ার সামনে দাঁড়ালে আরাম হয় কেন
গরমকালে আমাদের শরীর ঘামে। এই ঘাম আসলে আমাদের ত্বক থেকে জল বের করে আনে। যখন আমরা হাওয়ার সামনে দাঁড়াই, তখন সেই হাওয়া আমাদের শরীরের ঘামকে খুব তাড়াতাড়ি শুকিয়ে দেয়।
জল যখন বাষ্প হয়ে উড়ে যায়, তখন তা আমাদের শরীর থেকে তাপ নেয়। অনেকটা যেন এক টুকরো বরফ গলে যাওয়ার সময় তার চারপাশের জিনিসকে ঠান্ডা করে দেয়। তাই, ঘাম শুকিয়ে যাওয়ার সময় আমাদের শরীর ঠান্ডা হয় এবং আমরা আরাম অনুভব করি।
সহজভাবে বলতে গেলে, ঘাম শুকানোর প্রক্রিয়া আমাদের শরীরকে ঠান্ডা করে দেয়, আর সেই কারণেই গরমকালে ঘামে ভেজা শরীরে হাওয়ার সামনে দাঁড়ালে আরাম লাগে।
গরমকালে কুকুর জিভ বার করে কেন
গরমকালে কুকুর জিভ বার করে হাঁপাতে থাকে কারণ তাদের শরীরে ঘর্মগ্রন্থি (sweat glands) মানুষের মতো তেমন развиিত (developed) নয়। মানুষের শরীরে ঘাম বের হয়ে ত্বক ঠান্ডা রাখে, কিন্তু কুকুরের প্রধান উপায় হলো জিভের মাধ্যমে শরীর ঠান্ডা করা।
যখন কুকুর হাঁপায়, তখন তাদের ভেজা জিভের উপর দিয়ে বাতাস চলাচল করে। এই বাতাস জিভের জলীয় অংশকে বাষ্পীভূত (evaporate) করে নেয়। বাষ্পীভবনের সময় জলীয় অংশ তাপ শোষণ করে, ফলে কুকুরের জিভ এবং এর মাধ্যমে তাদের শরীর ঠান্ডা হয়।
তাই, গরমকালে কুকুরকে জিভ বার করে হাঁপাতে দেখলে বুঝবেন যে তারা তাদের শরীরের অতিরিক্ত তাপ বের করে দেওয়ার চেষ্টা করছে। এটা তাদের শরীরকে ঠান্ডা রাখার স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।
স্ফুটন কাকে বলে ও স্ফুটনাঙ্ক কাকে বলে
স্ফুটন (Boiling):
স্ফুটন হলো একটি ভৌত প্রক্রিয়া। যখন কোনো তরল পদার্থকে তাপ দেওয়া হয় এবং তার ভেতরের বুদবুদগুলো দ্রুত বাষ্পে পরিণত হয়ে তরলের পুরো অংশ জুড়ে ফুটতে শুরু করে, তখন সেই প্রক্রিয়াকে স্ফুটন বলে। স্ফুটনের সময় তরল পদার্থটি গ্যাসীয় অবস্থায় পরিবর্তিত হতে থাকে।
সহজভাবে বললে, যখন আমরা কোনো পাত্রে জল গরম করি এবং দেখি যে জল টগবগ করে ফুটছে এবং বুদবুদ উঠছে, সেটাই হলো স্ফুটন।
স্ফুটনাঙ্ক (Boiling Point):
স্ফুটনাঙ্ক হলো সেই নির্দিষ্ট তাপমাত্রা, যে তাপমাত্রায় কোনো তরল পদার্থ বায়ুমণ্ডলীয় চাপে ফুটতে শুরু করে অর্থাৎ বাষ্পে পরিণত হতে শুরু করে। প্রতিটি তরলের নিজস্ব স্ফুটনাঙ্ক থাকে।
উদাহরণস্বরূপ, স্বাভাবিক বায়ুমণ্ডলীয় চাপে জলের স্ফুটনাঙ্ক হলো 100 ডিগ্রি সেলসিয়াস (°C)। এর মানে হলো, জলকে যখন 100°C তাপমাত্রায় গরম করা হয়, তখন তা ফুটতে শুরু করে এবং বাষ্পে পরিণত হয়।
স্ফুটন একটি প্রক্রিয়া, আর স্ফুটনাঙ্ক হলো সেই নির্দিষ্ট তাপমাত্রা যে তাপমাত্রায় ঐ স্ফুটনের প্রক্রিয়াটি শুরু হয়।
তরলের স্ফুটনাঙ্ক কোন কোন বিষয়ের উপর নির্ভর করে
অবশ্যই! তরলের স্ফুটনাঙ্কের আরও দুটো গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো:
৩. দ্রবীভূত পদার্থের উপস্থিতি: যদি কোনো বিশুদ্ধ তরলে অন্য কোনো পদার্থ দ্রবীভূত থাকে (যেমন লবণ মেশানো জল), তবে সাধারণত সেই দ্রবণের স্ফুটনাঙ্ক বিশুদ্ধ তরলের স্ফুটনাঙ্ক থেকে বেড়ে যায়। এর কারণ হলো দ্রবীভূত পদার্থ তরলের অণুগুলোর মুক্তভাবে বাষ্পে পরিণত হওয়ার প্রবণতাকে কিছুটা কমিয়ে দেয়।
৪. আন্তঃআণবিক শক্তি (Intermolecular Forces): আগেই বলা হয়েছে, তরলের অণুগুলোর মধ্যেকার আকর্ষণ বল স্ফুটনাঙ্ক নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। শক্তিশালী আন্তঃআণবিক শক্তিযুক্ত তরলকে বাষ্পে পরিণত করতে বেশি শক্তির প্রয়োজন হয়। উদাহরণস্বরূপ, জলের অণুগুলোর মধ্যে হাইড্রোজেন বন্ধন নামক একটি শক্তিশালী আকর্ষণ বল থাকে, যার কারণে এর স্ফুটনাঙ্ক তুলনামূলকভাবে বেশি। অন্যদিকে, দুর্বল আন্তঃআণবিক শক্তিযুক্ত তরলের স্ফুটনাঙ্ক কম হয়।
তরলের স্ফুটনাঙ্ক মূলত দুটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে:
১. বায়ুমণ্ডলীয় চাপ: তরলের স্ফুটনাঙ্ক সরাসরি বায়ুমণ্ডলীয় চাপের উপর নির্ভরশীল। চাপ যত বেশি হবে, স্ফুটনাঙ্ক তত বাড়বে। এর কারণ হলো, তরলকে ফুটতে হলে তার ভেতরের বাষ্পের চাপ বাইরের চাপের সমান হতে হয়। বাইরের চাপ বেশি থাকলে, তরলকে সেই চাপ অতিক্রম করে বাষ্পে পরিণত হতে বেশি তাপমাত্রার প্রয়োজন হয়। যেমন, পাহাড়ের উপরে বায়ুমণ্ডলীয় চাপ কম থাকায় জল 100°C এর আগেই ফুটতে শুরু করে। অন্যদিকে, প্রেসার কুকারে চাপ বেশি থাকার কারণে জলের স্ফুটনাঙ্ক বাড়ে এবং খাবার তাড়াতাড়ি সেদ্ধ হয়।
২. তরলের প্রকৃতি: বিভিন্ন তরলের স্ফুটনাঙ্ক বিভিন্ন হয়। এটি নির্ভর করে তরলের অণুগুলোর মধ্যেকার আকর্ষণ বলের উপর। যে তরলের অণুগুলোর মধ্যে আকর্ষণ বল যত বেশি, সেই তরলকে বাষ্পে পরিণত করতে তত বেশি শক্তির প্রয়োজন হয়, ফলে তার স্ফুটনাঙ্কও বেশি হয়। উদাহরণস্বরূপ, জলের অণুগুলোর মধ্যে শক্তিশালী হাইড্রোজেন বন্ধন থাকার কারণে এর স্ফুটনাঙ্ক ইথানলের চেয়ে বেশি। ইথানলের অণুগুলোর মধ্যে দুর্বল ভ্যান ডার ওয়ালস বল কাজ করে, তাই এর স্ফুটনাঙ্ক কম।
সুতরাং, কোনো তরলের স্ফুটনাঙ্ক নির্ধারণে তার উপরিস্থ বায়ুমণ্ডলীয় চাপ এবং তার নিজস্ব রাসায়নিক গঠন ও অণুগুলোর মধ্যেকার আকর্ষণ বল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
স্টিমের লীনতাপ 537ক্যিলোরি বলতে কি বোঝায়
স্টিমের লীনতাপ 537 ক্যালোরি/গ্রাম বলতে বোঝায় যে, প্রমাণ চাপে 100°C তাপমাত্রার 1 গ্রাম জলকে 100°C তাপমাত্রার 1 গ্রাম বাষ্পে পরিণত করতে 537 ক্যালোরি তাপশক্তির প্রয়োজন। এই তাপমাত্রায় জলের অবস্থার পরিবর্তন ঘটে, কিন্তু তার উষ্ণতার কোনো পরিবর্তন হয় না।
সহজভাবে বললে, 100°C এর জলকে বাষ্প হতে হলে প্রতি গ্রাম জলের জন্য অতিরিক্ত 537 ক্যালোরি তাপ শোষণ করতে হয়। এই তাপ জলের অণুগুলোর মধ্যেকার বন্ধন ভেঙে সেগুলোকে গ্যাসীয় অবস্থায় যেতে সাহায্য করে।
এর মানে হলো, 100°C এর জল এবং 100°C এর বাষ্পের মধ্যে শক্তির পার্থক্য রয়েছে। 100°C এর বাষ্পে 100°C এর জলের চেয়ে প্রতি গ্রামে 537 ক্যালোরি বেশি শক্তি জমা থাকে। এই কারণেই গরম জল থেকে স্টিমের সংস্পর্শে এলে বেশি পোড়া লাগে, কারণ স্টিমের মধ্যে অতিরিক্ত তাপশক্তি থাকে।
ঘনীভবন কাকে বলে
ঘনীভবন হলো বাষ্প বা গ্যাস থেকে তরলে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়া। যখন কোনো গ্যাসীয় পদার্থ ঠান্ডা হয়, তখন তার অণুগুলোর গতি কমে যায় এবং তারা একে অপরের কাছাকাছি এসে তরলে পরিণত হয়।
সহজভাবে বললে, যখন গরম জলীয় বাষ্প ঠান্ডা কোনো কিছুর সংস্পর্শে আসে, তখন তা ছোট ছোট জলের ফোঁটায় পরিণত হয়। এই জলের ফোঁটাগুলোই হলো ঘনীভবনের ফল।
তুমি নিশ্চয়ই শীতকালে দেখেছ যে ঘাসের উপর ছোট ছোট জলের কণা জমে থাকে, অথবা ঠান্ডা জলের বোতলের বাইরের দিকে বিন্দু বিন্দু জল দেখা যায়। এগুলো সবই ঘনীভবনের উদাহরণ। বাতাসে থাকা জলীয় বাষ্প ঠান্ডা জিনিসের সংস্পর্শে এসে ঠান্ডা হয়ে তরলে পরিণত হয়।
জলীয় বাষ্প দ্বারা সম্পৃক্ত বায়ু বলতে কি বোঝায়
জলীয় বাষ্প দ্বারা সম্পৃক্ত বায়ু মানে হলো সেই বাতাস, যা তার সর্বোচ্চ পরিমাণে জলীয় বাষ্প ধারণ করে আছে। সহজভাবে বললে, একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় বাতাস যতটা জলীয় কণা ধরে রাখতে পারে, সম্পৃক্ত বায়ু ঠিক ততটাই ধরে রাখে। এর বেশি জলীয় বাষ্প মেশাতে গেলে তা আর গ্যাसीय অবস্থায় থাকতে পারে না, ছোট ছোট জলের ফোঁটা হিসেবে জমা হতে শুরু করে।
ব্যাপারটা অনেকটা এরকম: একটা নির্দিষ্ট আকারের বালতিতে তুমি যেমন একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ জলই ভরতে পারবে, তার বেশি ভরতে গেলে জল উপচে পড়বে। তেমনই, একটা নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় বাতাস একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ জলীয় বাষ্পই ধরে রাখতে পারে, তার বেশি হলে তা ঘনীভূত হয়ে জলকণায় পরিণত হয়।
তুমি শিশির বিন্দু দেখেছ নিশ্চয়ই? রাতের বেলা যখন বাতাস ঠান্ডা হয়, তখন তার জলীয় বাষ্প ধারণ করার ক্ষমতা কমে যায়। ফলে অতিরিক্ত জলীয় বাষ্প আর বাতাসে থাকতে না পেরে ঘাস বা পাতার উপর ছোট ছোট জলের ফোঁটা হিসেবে জমা হয়। সম্পৃক্ত বায়ু ঠিক সেই অবস্থার মতো, যেখানে বাতাস আর একটুও জলীয় বাষ্প নিতে পারছে না।
তাপের প্রবাহ : পরিবহন পদ্ধতি বলতে কি বোঝায়
তাপের প্রবাহের পরিবহন পদ্ধতি মানে হলো যখন কোনো কঠিন বস্তুর এক অংশ থেকে অন্য অংশে তাপ স্থানান্তরিত হয়, কিন্তু বস্তুটি নিজে স্থান পরিবর্তন করে না।
তুমি একটা গরম লোহার রড ধরলে দেখবে যে কিছুক্ষণ পর তোমার হাতও গরম লাগছে। এখানে রডের যে অংশটা আগুনের সংস্পর্শে ছিল, সেখানকার অণুগুলো উত্তপ্ত হয়ে তাদের পাশের অণুগুলোকে ধাক্কা দেয়। এভাবে ধাক্কা দেওয়ার মাধ্যমে তাপ এক অণু থেকে অন্য অণুতে ছড়িয়ে পড়তে থাকে এবং রডের ঠান্ডা অংশটাও গরম হয়ে যায়। এই প্রক্রিয়ায় রড কিন্তু নিজের জায়গা থেকে সরে যায়নি।
পরিবহন পদ্ধতিতে তাপ মূলত কঠিন পদার্থের মধ্যে দিয়ে যায়। কঠিন পদার্থের অণুগুলো খুব কাছাকাছি থাকে বলে তারা সহজেই একে অপরের সাথে ধাক্কা দিয়ে তাপের শক্তিকে ছড়িয়ে দিতে পারে।
কিছু ভালো তাপ পরিবহী (যেমন ধাতু) খুব তাড়াতাড়ি গরম হয়, আবার কিছু খারাপ তাপ পরিবহী (যেমন কাঠ বা প্লাস্টিক) ধীরে ধীরে গরম হয়। খারাপ তাপ পরিবহীকে আমরা তাপ নিরোধকও বলি, যা তাপকে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে বাধা দেয়। যেমন, শীতকালে আমরা গরম জামাকাপড় পরি, কারণ তারা আমাদের শরীরের তাপ বাইরে যেতে বাধা দেয়।
শীতকালে হাতি গায়ে ধুলো মাখার কারণ
শীতকালে হাতি গায়ে ধুলো মাখে কারণ এটি তাদের শরীরকে ঠান্ডা থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
গরমকালে যেমন আমরা ঘামি, তেমনি হাতিদের ত্বক থেকেও কিছুটা তেল বের হয়। এই তেল ঠান্ডা আবহাওয়ায় জমাট বাঁধতে পারে এবং তাদের চামড়া শক্ত করে ফেলতে পারে, যা তাদের জন্য অস্বস্তিকর হতে পারে।
যখন হাতিরা ধুলো মাখে, তখন সেই ধুলো তাদের ত্বকের উপর একটা স্তরের মতো তৈরি করে। এই ধুলোর স্তরটা অনেকটা গরম জামাকাপড়ের মতো কাজ করে, যা তাদের শরীরের ভেতরের তাপ বাইরে যেতে বাধা দেয় এবং ঠান্ডা থেকে রক্ষা করে।
এছাড়াও, ধুলো মাখা তাদের ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকেও কিছুটা রক্ষা করতে পারে। আর হ্যাঁ, হাতিদের গায়ে ধুলো মাখতে বেশ ভালোও লাগে!